সৌদি শিল্পী আজলান গারেমের শৈল্পিক কুশলতায় নির্মিত এই মসজিদটি মূলত একটি ভাস্কর্যশিল্প। মসজিদের আকৃতিতে নির্মিত এই শিল্প-স্থাপনায় সাধারণ মসজিদের মতো দৈনিক পাঁচবার আজান দিয়ে নামাজ আদায় করা হয়।
সম্পূর্ণ খোলামেলা, কিন্তু বিশেষভাবে ঘেরাও দেওয়া মসজিদটি বিচিত্র ধরনের ও বিভিন্ন রকমের উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে ইট-সিমেন্ট ব্যবহারের পরিবর্তে এতে প্লেক্সিগ্লাস, অ্যালুমিনিয়াম, ইস্পাত এবং বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ-উপাদানের মাধ্যমে সাধারণ জায়গা থেকে মসজিদটি আলাদা করতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী ঠেকানো ব্যারিকেড বা গুয়ান্তানামো বে’র মার্কিন কারাগারের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে হয়। মসজিদটির ভেতরে অবস্থানকারীদের মনেও এটি এক প্রকার বন্দি জীবনের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এটিই স্থাপত্য-মসজিদটির অভূতপূর্ব শৈল্পিক সাফল্য। তারের প্রাচীর শুধু মানুষকেই নয়, মানুষের চিন্তা-ভাবনাকেও যে বন্দি করে- এই স্থাপনার মাধ্যমে মূলত এই ভাবনাটিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
যারা মসজিদের অভ্যন্তরের কার্যকলাপ সম্পর্কে জানেন না বা কখনোই মসজিদে প্রবেশ না করার কারণে মসজিদের অভ্যন্তরীণ আমল ও কর্ম সম্পর্কে ধারণা নেননি, এটির মাধ্যমে তারা মসজিদের ভেতরকার পরিবেশ ও কর্ম সম্পর্কে সহজেই দেখতে ও জানতে পারবেন। সর্বপ্রথম সৌদি আরবে মসজিদটি স্থাপনের পর তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। তবে পশ্চিমা বিশ্বে এটি দারুণভাবে আদৃত হয়েছে। কানাডার বিখ্যাত শহর ভাঙ্কুভারের ‘ভেনিয়ার পার্কে’ স্থাপত করা হয়েছে মসজিদটি। আগামী দুই বছর এটি এখানে রাখা হবে। শিল্পী আজলান আশা করেন, তার শিল্পকর্মটি শুধুই প্রদর্শনের বস্তু হবে না বরং এটি চিন্তা-ভাবনার দেওয়া-নেওয়া, পারস্পরিক সংলাপ এবং আলোচনার কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
আজলান পেশায় স্কুলশিক্ষক। মসজিদ-স্থাপত্যটিই তার জীবনের প্রথম শিল্পকর্ম নয়। এর আগে তিনি ‘মাউন্ট অব মেরসি’ (Mount Of Mercy) সংগ্রহ তৈরি করেন। এটি মূলত আরাফাতের ময়দান সংলগ্ন পাহাড়ে আগমনকারী হাজিদের দশ হাজারেরও বেশি আলোকচিত্রের সংগ্রহ, যা তিনি ছয় বছরে দীর্ঘ পরিশ্রম করে সংগ্রহ করেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮
এমএমইউ/টিএ