স্থানীয় অমুসলিমরা এমন আয়োজনে বেশ আগ্রহ-উচ্ছ্বাসে অংশগ্রহণ করছেন। এমনকি কয়েকজন সংসদ সদস্যও প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টলে অংশ গ্রহণ করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় জনগণের ভাষায় অনুদিত পবিত্র কোরআনের অনুবাদ কপিটির ব্যাপারে প্রদর্শনীতে দর্শকদের পক্ষ থেকে বেশ সাড়া পাওয়া গেছে। এ প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা মুসলিমদের ধর্ম, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও অন্যান্য বিষয়ে পরিচিত হচ্ছে। এ দিকটি আয়োজকদের বেশ আশান্বিত করেছে।
প্রদর্শনীতে হাজির হয়ে নিউজিল্যান্ডের সংসদ সদস্য ডেভিড বেন্ট ও টিম মাসিন্দো সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখায় মুসলমানদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের দেশটিতে ইসলাম ধর্মের বিকাশ শুরু হয় ১৮৭০ সালে। মূলত অভিবাসীদের মাধ্যমেই ইসলামের প্রচার ও প্রসার হয়। স্বর্ণ অনুসন্ধান-পেশায় জড়িত ১৫ জন চীনা মুসলমান জীবিকার অন্বেষণে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ওটাগোর ডানস্টানের স্বর্ণক্ষেত্রে তারা কাজ করতেন।
পরে ১৯০০ সালের শুরুর দিকে গুজরাটের তিনটি মুসলিম পরিবার সেখানে বসতি স্থাপন করে। তারপর ১৯৬০ সাল পর্যন্ত পূর্ব ইউরোপ এবং ভারত থেকে আসা আরও কিছু অভিবাসী মুসলমান সেখানে বসবাস শুরু করেন স্থায়ীভাবে।
সরকারি হিসাবমতে ১৯৫০ সালে নিউজিল্যান্ডে মুসলমান অধিবাসী ছিল মাত্র ১৫০ জন। ১৯৬০ সালে ২৬০-এ উন্নীত হয় এ সংখ্যা। ১৯৭০ সালে ফিজি থেকে আসা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলমানরা নিউজিল্যান্ডে বড় আকারে বসতি স্থাপন শুরু করেন। নব্বইয়ের দশকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশের প্রচুর উদ্বাস্তু মুসলমান নিউজিল্যান্ডে নিবাস গড়ে তোলেন। ক্রমান্বয়ে এভাবেই নিউজিল্যান্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। দেশের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে সর্বাধিক মুসলিমদের আবাস রয়েছে।
মুসলিম জনগোষ্ঠী নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে ইসলামের মূল্যবোধ-বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক রীতি-নীতি সম্পর্কে প্রচারণা চালান। ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেওয়ার জন্য অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এ লক্ষ্যে আন্তঃধর্মীয় আলোচনা, ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ডিনার এবং ইসলামী শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়।
জনসংখ্যায় মুসলিমরা কম হলেও নিউজিল্যান্ডে বেশ আন্তরিকতা ও ধর্মভীরুতার সঙ্গে ইসলাম প্রচার-প্রসারের কাজ করে যাচ্ছেন। ধর্মচর্চায়ও তারা অন্যান্য দেশের মুসলিমদের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
এমএমইউ/আরএ