ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

শীতকালে নফল রোজা রাখার সুবিধা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৮
শীতকালে নফল রোজা রাখার সুবিধা ছবি : প্রতীকী

শীতকালে দিন অনেকটা ছোট হয়ে আসে। আবার শৈত্যপ্রবাহ বেশ প্রভাব ফেলে। ফলে এ ঋতুতে রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় যেমন না খেয়ে থাকতে হয় না, তেমনি তৃষ্ণায় কাতর হওয়ারও আশঙ্কা থাকে না।

সুতরাং শীতকালে কাজা রোজা থাকলে সেগুলো আদায়ের দারুণ ও মোক্ষম সুযোগ থাকে। তাছাড়া নফল রোজা রাখার তো একটি সুবর্ণ সময়ও বটে।

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর জন্য যে ব্যক্তি একদিন রোজা রাখল, আল্লাহ তায়ালা প্রতিদানস্বরূপ জাহান্নাম এবং ওই ব্যক্তির মধ্যে ৭০ বছরের দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। ’ (বোখারি, হাদিস নং: ২৮৪০, মুসলিম, হাদিস নং: ১১৫৩)

তাই সহজতার কারণে শীতকালীন সময়ে অধিকহারে নফল রোজা রাখায় যত্নবান হওয়া উচিত।

বেশি বেশি নফল রোজা সম্ভব না হলে অন্তত কিছু রোজা রাখা যায়। নিম্নে কিছু নফল রোজার প্রকারের আলোচনা করা হলে।  

আইয়ামে বিজ বা মাসের মধ্য তিনদিনের রোজা
আইয়ামে বিজ বলা হয় হিজরি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজাকে। শীতকালে দিন ছোট হওয়ায় এ রোজাগুলো রাখা অনেকটা সহজ।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার বন্ধু প্রিয়নবী (সা.) আমাকে ৩টি কাজের ওসিয়ত করেছেন, প্রত্যেক মাসে ৩টি রোজা রাখতে, চাশতের ২ রাকাত নামাজ পড়তে এবং ঘুমানোর আগে বিতর নামাজ আদায় করে নিতে। ’ (বোখারি, হাদিস নং: ১১২৪)

সোম-বৃহস্পতিবারের রোজা
শীতকালে প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজাও সহজ। এ ২ দিন রোজা রাখা প্রিয় নবী (সা.) এর নিয়মিত রুটিন ছিল। আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘সোম ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ব্যাপারে নবী (সা.) খুবই যত্নবান ছিলেন। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৭৪৫)

আবু হুরায়রা (রা.) এর বর্ণনা সূত্রে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষের আমলগুলো প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহ তায়ালার কাছে পেশ করা হয়। আর আমি চাই, রোজাদার অবস্থায় আমার আমলগুলো পেশ করা হোক। ’ (সুনানে তিরমিজি: ৭৪৭)

সাওমে দাউদ (আ.) বা দাউদ (আ.) এর রোজা
কারো যদি শক্তি-সামর্থ্য ও সক্ষমতা থাকে, তাহলে সওমে দাউদ (আ.) পালন করা রোজা রাখার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি। আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) একদিন রোজা রাখতেন এবং একদিন রাখতেন না। এটাই ছিল তার নফল রোজা রাখার নিয়ম।  

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বলেন, নবীজি (সা.)-কে সংবাদ দেয়া হলো যে আমি বলেছি, আল্লাহর শপথ! আমি (প্রত্যহ) দিনে রোজা রাখব এবং রাত্রে নফল নামাজে দাঁড়িয়ে থাকব। তিনি জিজ্ঞেস করলে আমি বললাম, জ্বী আমি এমনটা বলেছি। তখন নবীজি আমাকে উপদেশ দিয়ে বললেন, তুমি তা পারবে না। (দিনে) রোজা রাখ এবং খাও, (রাত্রে) ঘুমাও এবং নামাজে দাঁড়াও, প্রতি মাসে ৩টি রোজা রাখ; কেননা এক নেকির বদলে দশগুণ সওয়াব আর এটা পুরো মাস রোজা পালনের সমান। আমি বললাম, আল্লাহর রাসুল! আমি এরচেয়ে বেশি রোজা রাখতে সক্ষম। তিনি বললেন, তাহলে একদিন রোজা রাখবে এবং দুইদিন খাবে। বললাম, আমি তারচেয়ে বেশি রাখতেও সক্ষম। বললেন, তবে একদিন রোজা রাখবে এবং একদিন খাবে। এটি নবী দাউদ (আ.) এর রোজা এবং এটি সর্বোত্তম রোজা। বললাম, আমি তারচেয়ে অধিক রাখতেও সক্ষম। নবীজি (সা.) বলে দিলেন, এরচেয়ে উত্তম কোনো রোজা নেই। ’ (বোখারি: ১৮৭৫)

শীতকালের সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আল্লাহ তাআলা আমাদের বেশি বেশি নফল রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৮
এমএমইউ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।