ইমাম ওয়াকিদি (রহ.) বর্ণনা মহানবী (সা.)-এর চাদরের দৈর্ঘ্য ছিল ছয় হাত এবং প্রস্থ ছিল তিন হাত।
অন্য বর্ণনায় উরওয়া বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যে চাদর পরিধান করে বিশেষ মেহমান ও আগন্তুকদের সামনে আসতেন, তার দৈর্ঘ্য ছিল চার হাত এবং প্রস্থ ছিল দুই হাত ও এক বিঘত।
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাপড়ের দৈর্ঘ্য ছিল চার হাত ও এক বিঘত এবং প্রস্থ ছিল এক হাত।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) চতুর্ভুজ সমান দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের চাদর পরিধান করতেন। মোট কথা হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) চার থেকে ছয় হাত দৈর্ঘ্য ও দেড় থেকে তিন হাত প্রস্থ চাদর পরিধান করতেন।
রাসুল (সা.) যেভাবে চাদর পরতেন
চাদর পরিধানের বিষয়ে আমরা স্বভাবতই বুঝতে পারি যে কাঁধের ওপর রেখে দুই প্রান্ত দুই দিকে বা এক দিকে রেখে চাদর পরা হয়। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময় শরীরে পেঁচিয়ে চাদর পরিধান করতেন। কখনো বা বাঁ কাঁধের ওপর চাদর রেখে ডান কাঁধ খোলা রেখে বগলের নিচে দিয়ে পেঁচিয়ে চাদর পরিধান করতেন। সাধারণভাবে চাদর মাথা আবৃত করার জন্য ব্যবহার করা হয় না। তবে কখনো কখনো তিনি চাদর বা চাদরের প্রান্ত দিয়ে মাথা আবৃত করতেন বা চাদরকে মাথার ওপর রুমাল হিসেবে ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়।
আল্লামা ইবনে ইউসুফ শামি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজে নিজের শরীরের চাদর ঘুরিয়ে নেন। এতে প্রমাণিত হয়, তিনি চাদর পরতেন মাথার ওপর দিয়ে। এ থেকে বোঝা যায়, তিনি মাথা ও দুই কাঁধের ওপর চাদর ফেলে রাখতেন, তা জড়িয়ে নিতেন না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) তৎকালীন সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন রঙের লুঙ্গি ও চাদর পরিধান করেছেন। কালো, সবুজ, সাদা, লাল, হলুদ ও মিশ্রিত ডোরাকাটা রঙের চাদর ও লুঙ্গি তিনি পরিধান করেছেন বলে বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়। এগুলোর মধ্যে সবুজ বা মিশ্র রং তিনি বিশেষভাবে পছন্দ করতেন এবং সাদা রঙের পোশাক পরতে উৎসাহ দিয়েছেন। ডোরাকাটা রঙের পোশাক তিনি পছন্দ করতেন বলেও বর্ণিত হয়েছে।
রাসুল (সা.) অত্যন্ত কম দামের পাঁচ থেকে সাত দিরহামের লুঙ্গি ও চাদর পরিধান করেছেন। আবার অত্যন্ত দামি তিন হাজার দিরহামের লুঙ্গি ও চাদর পরিধান করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর সাধারণ রীতি ছিল, সাধারণভাবে সহজলভ্য ও বিলাসিতামুক্ত পোশাক পরিধান করা। কেউ দামি পোশাক হাদিয়া দিলে তা ফিরিয়ে না দিয়ে প্রয়োজনমতো তিনি ব্যবহার করতেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮
এমএমইউ/