ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিখ্যাত নগরী বুখারা 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিখ্যাত নগরী বুখারা  শেখ আবদুল্লাহ ইয়ামানির তৈরি মির-ই-আরাব মাদ্রাসা, বুখারা, উজবেকিস্তান। ছবি : সংগৃহীত

উজবেকিস্তানের প্রাচীন শহর বুখারা মধ্য এশিয়ার ছিমছাম, নিরিবিলি অথচ প্রাণবন্ত শহর। রেশমের জন্য বুখারার খ্যাতি জগৎজোড়া। এ ছাড়াও বুখারায় প্রাকৃতিক গ্যাস, তুলা ও ফল ইত্যাদি উৎপাদিত হয়। পাশাপশি বস্ত্র, কার্পেট ও পশমের জন্যও বুখারা বিখ্যাত।

খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতকে বুখারা শহরের গোড়াপত্তন হয়। বুখারার অনেক স্থাপত্য নিদর্শন আছে, যেগুলোর কিছু ৯ম খ্রিস্টাব্দের।

৯ম খ্রিস্টাব্দেই বহু শিল্পী, কবি ও বিজ্ঞানী বুখারায় ভিড় করেছিল। তখনকার এক পণ্ডিত বুখারাকে ‘সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মিলন স্থল, বিশ্বের শিল্প-সংস্কৃতির তারকা ব্যক্তিদের উত্থানের জায়গা এবং সময়ের কৃতি সন্তানদের সম্মেলন স্থল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

শেখ আবদুল্লাহ ইয়ামানির তৈরি মির-ই-আরাব মাদ্রাসার বাইরের দৃশ্য।  ছবি : সংগৃহীত

উজবেকিস্তানের বিখ্যাত শহর সমরকন্দের পশ্চিমে অবস্থিত বুখারা মধ্য এশিয়ায় ইসলামের ঐতিহ্যবাহী নগরী, ইসলামী সংস্কৃতি ও ধর্মীয় দর্শনের অন্যতম পীঠস্থান, আরেক বিখ্যাত নগর সমরকন্দের সঙ্গে সমুচ্চারিত তার নাম। বুখারা একসময় ইসলামচর্চার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল। এখানেই ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর জগদ্বিখ্যাত বুখারি শরিফের সংকলন সম্পন্ন করেন। এ শহরেই শায়েখ বাহাউদ্দিন নকশবন্দি (রহ.) আধ্যাত্মিক সাধনায় ব্রতী হয়েছিলেন।

১৩৩০ খ্রিস্টাব্দে ইতিহাসের মহা পরিব্রাজক ইবনে বতুতা এই শহরে ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি এই শহরকে ‘বিশ্বের সুন্দরতম বৃহৎ শহর’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। বাস্তবেই প্রাচীন মসজিদ-স্থাপত্য, প্রাসাদ, বাগান-বীথি এবং নির্মাণশৈলী পর‌্যটকদের সহজেই মুগ্ধ ও মোহাবিষ্ট করে।

শেখ আবদুল্লাহ ইয়ামানির তৈরি মির-ই-আরাব মাদ্রাসার মনোরম দৃশ্য।  ছবি : সংগৃহীত

বুখারাতে ৩৫০টি মসজিদ ও ১০০টির বেশি মাদ্রাসা আছে। আর পুরাতন বুখারার প্রবেশপথে রাস্তার দুই দিকের স্থাপত্যগুলো মুসলিম-ঐতিহ্যের স্মৃতি ধরে রেখেছে। ৯৪ হিজরিতে নির্মিত একটি মসজিদ বুখারা নগরীতে এখনো রয়েছে। এছাড়াও বুখারাতে ১৫১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল বিখ্যাত কালান মসজিদ। আরো নির্মাণ হয়েছিল ইয়েমেনের অধিবাসী শেখ আবদুল্লাহ ইয়ামানির তৈরি মির-ই-আরাব মাদ্রাসাটি।

১৪০টি ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে টিকে থাকা বুখারাকে বলা হয় City of Museum, যা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যেরই অংশ। ঐতিহাসিক সিল্ক রুটের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল বুখারা, ষষ্ঠ শতকে যা ছিল পৃথিবীর বাণিজ্যিক মানচিত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বণিজ্যিক কেন্দ্র।

ইসলাম বিভাগে লিখতে পারেন আপনিও। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
এমএমইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।