এবারের অমর একুশে বইমেলা অন্যান্য বছরের তুলনায় সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ। কোনো ধরনের রাজনৈতিক ও অন্যান্য হাঙ্গামা-হট্টগোল নেই।
বইমেলায় যারা আসেন তাদের বড় অংশ সময়মতো নামাজ পড়েন। অবশ্য সেই জন্য মেলা-কর্তৃপক্ষের আয়োজনে মেলা-প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করতে নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ থাকে। নামাজ আদায়ে সার্বিক সুযোগ-সুবিধা সবসময় থাকে। তবে এবারের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, অজুখানা, আশপাশের জায়গা সবকিছু সুন্দর ও পরিকল্পিত। নামাজ পড়ার জন্য সাময়িক নির্মিত (ডেকোরেটেড) মসজিদটি খুবই সুন্দর। ভেতরে লাল ও মূল্যবান কার্পেটের মাধ্যমে নামাজের কাতার ও সারি করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন নামাজের স্থান পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতার সু-ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দেখা গেছে, গতবারের তুলনায় নামাজের স্থানটি বেশ ভালো। জায়গার পরিসর বড় করা হয়েছে । নামাজের স্থানের নির্ধারিত জায়গার ভেতরে প্রায় ২০০-২২০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে।
মাঘের শেষদিনে যখন মাগরিবের নামাজ চলছিল, তখন দেখা গেছে মসজিদের ভেতর কানায় কানায় পূর্ণ। বাইরের আঙ্গিনাও মুসল্লিতে ভরপুর। তাদের ছাড়িয়ে সামনের খালি জায়গাটুকুতে মুসল্লিদের তীব্র ভিড়। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও দ্বিতীয় জামাতে নামাজ পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন কিছু বিবেচনায় মনে হয়েছে, বইমেলায় নামাজের নামাজের স্থান দীর্ঘ করা সত্ত্বেও যথেষ্ট নয়। পরিসর আরো কিছুটা বড় করলে বা অন্য কোনো পাশে আরো একটি নামাজের স্থানের ব্যবস্থা করলে ভিড় কিছুটা হলেও কমবে।
নামাজের অপেক্ষায় থাকা মুসল্লি ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘বই কিনতেই এখানে আসি। কিন্তু নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করে নিই। আজান হলে মুসলমান তো নামাজ পড়বেই। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কবি ফারুক আজম জানান, মেলা চলাকালীন সময়ে প্রতি ওয়াক্তের নামাজেই এখানে প্রচুর ভিড় দৃষ্টিগোচর হয়। আগের তুলনায় জায়গা বড়ো করলেও অত্যধিক মুসল্লির কারণে পুরো নামাজের স্থানের লোকসংখ্যা নিয়ে আলাদা আলাদা পাঁচ-ছয়টা করে জামাত হয়। এছাড়াও অসংখ্য মুসল্লি নিজেরা কিংবা ক্ষুদ্র জামাতে নামাজ আদায় করে নেন। ’
শুধু পুরুষদের ভেতর নামাজের গুরুত্ব ও আগ্রহ দেখা গেছে এমন নয়। বরং বিভিন্ন বয়সের নারীদের মাঝেও নামাজ আদায়ের প্রতি কর্তব্যবোধ দেখা গেছে। মাঝ বয়সী অনেক নারী মেলার অন্যপাশ থেকে হেঁটে ও ঘুরে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে নামাজের জন্য যেতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের নামাজের জন্য নির্ধারিত এই স্থানটি ছাড়াও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রাশাসনিক ভবনের উপরেও নামাজ আদায়ের সুন্দর ও মনোরম ব্যবস্থা রয়েছে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এমএমইউ