জানা গেছে, কোরআন ও আজান প্রতিযোগিতায় ইতোমধ্যে ১৬২ দেশের প্রায় ২১ হাজার প্রতিযোগী অংশ নেওয়ার সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। কোরআন প্রতিযোগিতায় ১১ হাজার ও আজান প্রতিযোগিতায় ৯ হাজার প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদনের সুযোগ
চলতি বছরের শুরুর দিকে সৌদি আরবের সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের (জিইএ) চেয়ারম্যান তুর্কি আল-শেইখ প্রতিযোগিতার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহীরা জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করতে পারবেন। (এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার নিয়ম-পদ্ধতি ও বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইটটি নজরে রাখা যেতে পারে। ক্লিক করুন: কোরআন-আজান প্রতিযোগিতা)
প্রতিযোগিতা বিভিন্ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্যায়ে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত আবেদনগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। (যারা ২৪ জুলাই থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত অংশ নিয়েছেন। )
এরপর আগস্ট থেকে অনুষ্ঠিত হবে অন-স্টেজ লাইভ পারফরমেন্স। আগস্টের ২৪ তারিখ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক বাছাই ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বাছাই প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের নির্বাচন করতে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে শেষ প্রতিযোগিতা। সর্বশেষ প্রতিযোগিতা শেষে চূড়ান্ত বিজয়ীদের পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।
বিজয়ীরা কে কত করে পাবে
কোরআনে প্রথম পুরস্কার বিজয়ীকে দেওয়া হবে ৫০ লাখ সৌদি রিয়াল। দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ীকে দেওয়া হবে ২০ লাখ সৌদি রিয়াল। তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ীকে দেওয়া হবে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল। চতুর্থ পুরস্কার বিজয়ীকে দেওয়া হবে ৫ লাখ সৌদি রিয়াল।
আজানে প্রথম স্থান অধিকারীকে দেওয়া হবে ২০ লাখ সৌদি রিয়াল। দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে দেওয়া হবে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল। তৃতীয় স্থান অধিকারীকে দেওয়া হবে ৫ লাখ সৌদি রিয়াল। চতুর্থ স্থান অধিকারীকে দেওয়া হবে ২ লাখ ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল।
প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে যারা থাকবেন-
ড. ফাহাদ বিন আল-আন্দস
তিনি সৌদির খারাজে অবস্থিত প্রিন্স সাত্তাম বিন আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরআনিক সায়েন্সের প্রভাষক। ২৭ বছর কিং ফয়সাল এয়ার একাডেমি মসজিদে ইমাম ও আলোচক ছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রিন্স সুলতান আন্তর্জাতিক মিলিটারি প্রতিযোগিতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
ড. মিশারি রাশেদ আল-আফাসি
আন্তর্জাতিক ক্বারি ও আল-আফাসি চ্যানেলের মালিক। পাশাপাশি একজন ইসলামী সঙ্গীতজ্ঞও বটে। মিশরে ও মদিনা মুনাওরায় অধ্যয়নকারী এই আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের বেশ কিছু কোরআন প্রকল্প রয়েছে। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
মুহাম্মদ তামিম আল-জুবি
কেরাত ও তাজবিদের বড় স্কলার। কোরআন শিক্ষা ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করেছেন। পবিত্র কোরআন মুদ্রণের জন্য নির্মিত কিং ফাহাদ কমপ্লেক্সের সদস্য। মদিনার পবিত্র মসজিদে নববীর কোরআন পাঠ্যক্রমের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্বারি। কেরাতের অঙ্গনে তিনি অত্যন্ত দক্ষ ও পারদর্শী। তার প্রচুর গবেষণা ও কোরআন পাঠ্যক্রমের বৈজ্ঞানিক কাজ রয়েছে তার।
আব্দুল রাফি রেদওয়ান আল-শারকাভি
আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা কলেজে শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন তিনি। দশ ধরনের কেরাত পাঠে সুদক্ষ। ১৩৯৫ হিজরিতে মদিনর ইসলামিক ইউনিভার্সিটির পবিত্র কোরআন কলেজের শিক্ষক হয়ে মদিনার চলে আসেন। তিনি পবিত্র ফাহাদ কমপ্লেক্সের পূর্ণ কোরআনের ছাপার বৈজ্ঞানিক কমিটির সদস্য। পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াত রেকর্ডের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির সদস্য।
ড. আবদুল রহিম আল-নাবুলসি
মরক্কোর মারাকেশের ‘আবি উমর আল-দানি কোরআন রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ সেন্টারে’র প্রধান ইমাম। রমজান মাসে মারাকিশ মহাহিম জেলায় তিনি প্রধান কোরআন তেলাওয়াতকারী। মারাকিশের আরবি ভাষা অনুষদে কেরাত বিভাগের অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। মক্কা উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা কলেজের ব্যাকরণ শিক্ষক। জেদ্দাস্থ ইমাম শাতিবি ইনস্টিটিউটের পাঠ্যক্রম প্রশিক্ষক। তার পাঠ্যক্রম, গবেষণাকর্ম এবং পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন নিয়ম-সূচি রয়েছে।
ড. আহমদ মিয়াঁ থানভি
দশ ধরনের কেরাত পাঠে সুদক্ষ এ শায়খ পাকিস্তান কোরআন পর্যালোচনা কমিটির প্রধান। লাহোরের ইসলামী বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরাত বিভাগের শিক্ষক। তিনি লাহোরে কোরআন পাঞ্জাবি কমিটি ও কেরাত সুপ্রিম কমিটির সদস্য। পাকিস্তানের জাতীয় রেডিওতে তার অনেক রেকর্ডিং নিয়মিত প্রচার করা হয়।
এছাড়াও শায়খ আল-বাহলুল সাইদ আবু আর-রাকিব, শায়খ মুফতাহ আল-আরফিন মাতারি, শায়খ মোহাম্মদ আল-হাদি তৌরি ও শায়খ ইবরাহিম সাবরুফ রয়েছেন বিচারকরে দায়িত্বে তারা প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিত্ব।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
এমএমইউ