জুন্নুন মিসরি... বহু প্রতিভাধারী জ্ঞানী-ব্যক্তিত্ব
তার পুরো নাম সাওবান ইবনে ইবরাহিম আল-মিসরি। উপনাম আবু ফাইজ।
পারিবারিক এমন আবহে বেড়ে ওঠেন জুন্নুন মিসরি। তার প্রাথমিক জীবনটা তার মানসে চিন্তা-ভাবনা ও বোধের কিশলয় অঙ্কুরিত করে। বিভিন্ন বর্ণনায় রয়েছে, একদিন তিনি হৈচৈ ও চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘এসব কিসের আওয়াজ?’ বলা হলো, বিয়ে বাড়ির শব্দ। অন্যপাশে আবার শুনতে পেলেন, কান্না ও হৃদয়বিদারক শব্দ-ধ্বনি। জানতে চাইলেন, এটি কিসের শব্দ? বলা হলো, অমুক মারা গেছেন, তার বাড়ির লোকজন কান্না করছেন। তখন তিনি বললেন, ‘এরা যেটার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে, সেটি পেয়েছে। আর ওরা যেটার ধৈর্য্য ধারণ করছে, সেটির মাধ্যমে পরীক্ষিত হচ্ছে। ’ এরপর কসম করে বললেন, শহরে আর রাত কাটাবেন না। এই বলেই ফুসতাত অঞ্চলের দিকে চলে যান। আর সেটিই হয়ে ওঠে তার আবাস্থল ও ঠিকানা। (আবদুল হালিম মাহমুদ, আল-আলিমুল আবিদ জুন্নুন আল-মিসরি, পৃষ্ঠা: ২২)
ফুসতাতে গিয়ে জুন্নুন মিসরির এক খোদাভীরু-সাধকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তার মাধ্যমে জুন্নুন মিসরির জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। তিনি তাসাউফ, তত্ত্বীয় জ্ঞান, দুনিয়াবিমুখতা ও অনাড়ম্বর জীবনের প্রতি ধাবিত হন। ওই ব্যক্তির নাম ছিল শাকরান আল-মাগরিবি। তিনি খোদাভীরুতা, পরোপকার ও তাকওয়া ইত্যাদির কারণে বিখ্যাত ছিলেন। তার ব্যাপারে তেমন বেশি তথ্য ও বিস্তারিত জীবনপঞ্জি পাওয়া যায় না। আবদুল ওয়াহহাব আশ-শারানি ‘তাবকাতুস সুফিয়্যাহ’ নামক গ্রন্থে বলেন, ‘এই বুজুর্গ-সাধকের খ্যাতি দেদীপ্যমান। তার আলোচনা ও প্রশংসা দারুণভাবে চর্চিত। আলোকোজ্জ্বল জীবন ও চমৎকার কাব্যের অধিকারী ছিলেন তিনি। ’ (আশ-শারানি, তাবকাতুস সুফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা: ৫০৯)
শিক্ষাজীবন ও কোরআন-হাদিসচর্চা
জুন্নুন মিসরি নিজের যুগের বড় বড় শায়েখ ও আলেম-জ্ঞানীদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। মদিনার ইমামখ্যাত ও মালেকি মাজহাবের প্রধান ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহ.)-এর কাছে পড়াশোনা করেন। তার বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ ‘মুআত্তা মালিক’ তার কাছে পড়েন। মিসরে বিখ্যাত হাদিসবিশারদ শায়খ আল-লাইস ইবনে সাআদের সান্নিধ্যও গ্রহণ করেন। এছাড়াও অন্যতম বিখ্যাত মনীষী ও আল্লাহপ্রেমিক ফুদাইল ইবনে আয়াদ এবং ইবনে লাহিয়া প্রমুখের কাছে জ্ঞান অর্জন করেন।
শুধু কোরআন-হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেই ক্ষান্ত হননি; চাইলে বড় হাদিসবিশারদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন। বরং সে যুগে প্রচলিত বিভিন্ন রকমের জ্ঞান অর্জনকে প্রাধান্য দেন। রসায়ন, প্রত্নতত্ত্ব, শিলালিপি ও চিকিৎসাজ্ঞানে বুৎপত্তি অর্জন করেন। রসায়নে তিনটি গ্রন্থ রচনা করেন: আর-রুকনুল আকবর, আস-সিকাহ ফিস সুনআহ ও আল-আজায়েব। (আন-নাদিম, আল-ফিহরিস্ত, পৃষ্ঠা: ৪৭২)
সূফিতত্ত্বের আঙিনায় জুন্নুন মিসরি
জুন্নুন মিসরি এত ধরনের জ্ঞান-অভিজ্ঞানের অধিকারী হওয়ায় তার কাছে শিক্ষার্থী ও বড় বড় মনীষীরা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। তা সত্ত্বেও জুন্নুন মিসরি আল্লাহর জমিনে ঘুরে-ফিরে ইবাদত-বন্দেগি ও দুনিয়াবিমুখিতার মাধ্যমে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। চলনে-বসনে তার অপার্থিবতা ফুটে উঠতো। একটি স্বতন্ত্র ও অনন্য সূফি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার প্রতি তার অদম্য ইচ্ছে ছিল। সম্ভবত একারণেই জার্মান প্রাচ্যবিদ অ্যানিমারিয়ে শিমেল বলেছেন, জুন্নুন মিসরি একই সঙ্গে অন্যতম প্রিয় সূফি-সাধক ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। (অ্যানিমারিয়ে শিমেল, আল-আবআদ আস-সুফিয়্যা ফিল ইসলাম, পৃষ্ঠা: ৫২)
ইসলামের ইতিহাসে জুন্নুন মিসরি ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি জ্ঞানগর্ভ ও গোছালো ভিত্তিতে ‘মারেফত তত্ত্ব’ সম্পর্কে আলোচনা করতেন। বরং ‘মারেফত বিল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ-পরিচয় তত্ত্ব’-কে তিনি তার সর্বোচ্চ ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য মনে করতেন। তিনি বলেন, ‘বান্দা যে পরিমাণ তার প্রতিপালক সম্পর্কে জানতে পারবে, সে পরিমাণ নিজেকে তুচ্ছ মনে করে। আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ মারেফত (পরিচয়) লাভ মানে নিজেকে পূর্ণাঙ্গ অস্বীকার করা। ’
এখানে ‘মারেফত বিল্লাহ’ থেকে উদ্দেশ্য হলো, বান্দা একথা বুঝতে পারা যে, একমাত্র আল্লাহই সত্য। প্রতিটি বস্তু তার নিয়ন্ত্রণে। তার ইচ্ছেতেই সবকিছু হয়। তিনি সর্ব শক্তিমান। আর বান্দার কোনো কার্যদক্ষতা ও শক্তি নেই। এভাবেই জুন্নুন মিসরি ‘মারেফত’ অর্জন করে নিজেকে তুচ্ছ ভাবতেন বা অস্বীকার করতেন। নিজেকে তুচ্ছ ভাবার এই বিষয়টিই পরবর্তীতে বায়েজিদ আল-বোস্তামির কাছে রূপ-সৌন্দর্য পেয়েছিল। (আবুল আলা আফিফি, আত-তাসাউফ; আস-সাওরাতুর রুহিয়্যা ফিল ইসলাম, পৃষ্ঠা: ৯২)
জুন্নুন মিসরি ‘মারেফত তত্ত্ব’, এর প্রকার-শ্রেণী ও অর্জনের পদ্ধতির এমন সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যেটা তার আগে কেউ দেয়নি। আল্লাহর মারেফত লাভের পদ্ধতি হলো কোরআন-সুন্নাহ। তার একত্ব ও শক্তিমত্তার জ্ঞান অর্জন হবে আবিষ্কারের মাধ্যমে। আর মহান আল্লাহর নামের মারেফত লাভ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে তার নির্বাচিত বান্দাদের প্রদত্ত বিশেষ উপহার। তাসাউফ বোঝার ক্ষেত্রে আবশ্যিক বিষয়গুলোর মতো ‘আল-বাতিন’ বা ‘অদৃশ্য’র চিন্তাধারার গভীরে পৌঁছার ক্ষেত্রে জুন্নুন মিসরির অবদান অনেক বড়। তিনি তাওবা সম্পর্কে বলেন, তাওবা দুই প্রকার; সাধারণদের তাওবা ও বিশিষ্টদের তাওবা। সাধরণরা তাওবা করবেন গুনাহ-অপরাধ থেকে। আর বিশিষ্টজনেরা তাওবা করবেন, অবহেলাবশতঃ আল্লাহর স্মরণ ও তার নিরঙ্কুশ ক্ষমতার ব্যাপারে চিন্তাধারা না করার কারণে। (আল-কুশাইরি, আর-রিসালাতুল কুশাইরিয়্যাহ, পৃষ্ঠা: ৩৯)
প্রকৃতিপ্রেমি ছিলেন জুন্নুন মিসরি
জুন্নুন মিসরি ছিলেন ভ্রাম্যমাণ সূফি মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি খুব বেশি সফর করতেন। তার ভাই-বন্ধু ও ভক্ত-অনুরক্তদের থেকে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা শোনার জন্য এবং তাদের শোনানোর জন্য। আল্লাহর জমিনে ঘুরে বেড়ানো ও ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি বিভিন্ন গল্পগুচ্ছ শোনাতেন।
তিনি মক্কা, বসরা, সিরিয়া, আল-আকসার পাহাড়-উপাত্যকা, সিনাই পর্বত, তুরস্কের আন্তাকিয়া ও ইরাক প্রভৃতি ভ্রমণ করেন। এসব দেশের প্রতিটি শহরে তার ভক্ত-অনুরক্তদের বড় অংশ গড়ে ওঠে। তার আলোচনা, জীবনযাপন ও গুণ-বৈচিত্রে তার মুগ্ধ এবং প্রভাবিত হয়।
প্রকৃতি ও নিসর্গের প্রতি জুন্নুন মিসরির আগ্রহ-উচ্ছ্বাস ছিল প্রবল। তার দোয়া ও বয়ানে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং রূপ-মাধুর্যের প্রীতি ফুটে ওঠে।
কাব্যচর্চায়ও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। কথাবর্তায় কাব্যের ভাবধারা স্ফুটিত হতো। ভালোবাসা, প্রকৃতির প্রেম-প্রীতি, বন্ধুজন, নির্জনতা ও সম্পর্ক-বন্ধন নিয়ে তার আলোচনা ঋদ্ধ থাকতো। অনুরূপভাবে তিনি সূফিতত্ত্বের বিভিন্ন শব্দ ও পরিভাষার কাণ্ডারি ছিলেন। (নুজালা আমিন, জুন্নুন আল-মিসরি ফিশ শেরিল ফার্সি আস-সুফি, পৃষ্ঠা: ১৯১)
তার পরিভাষাগুলোর নিগূঢ় অর্থ ও সূফিতত্ত্বের পথ-পরিক্রমার বিভিন্ন ব্যাখ্যা অনেক সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেননি। ফলে তারা জুন্নুন মিসরিকে নিরীশ্বরবাদ ও নাস্তিকতার অপবাদ দিয়েছিলেন। আর একারণে তাকে বন্দি করে বাগদাদ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি আব্বাসি খলিফা আল-মুতাওয়াক্কিল আলাল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মুতাওয়াক্কিল এই মানুষটার রহস্য ও তার প্রতি অপবাদের কারণ আবিষ্কার করতে চাচ্ছিলেন।
মুনাজাত ও মর্যাদার স্তরে...
দুনিয়াবিমুখিতা সম্পর্কে মুতাওয়াক্কিল তার কাছে কিছু শুনতে চাইলেন। দীর্ঘক্ষণ মাথা ঝুঁকিয়ে রেখে ও চিন্তাভাবনা করে জুন্নুন মিসরি বললেন, ‘আমিরুল মুমিনিন! আল্লাহর কিছু বান্দা গোপনে খুব নিষ্ঠার সঙ্গে তার ইবাদত করেছেন। অতপর যে নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, আল্লাহ তাদের সম্মানিত করেছেন। তাদের হিসাবের ফিরিস্তি ফিরিশতাদের সঙ্গে নিরম্বু শূন্য হয়ে চলাফেরা করে। এমতাবস্থায় গোপনীয়তার মাধ্যমে তা পূর্ণ করা হয়। তাদের শরীরগুলো দুনিয়াবি। কিন্তু তাদের অন্তরাত্মা আসমানমুখি। এতে তাদের হৃদয়গুলো মারেফত ধারণ করে; যেন তারা আসমানি ফিরিশতাদের বিভিন্ন শ্রেণির মাঝেই আল্লাহর ইবাদত করে। অসত্যের বসন্তে তারা হারিয়ে যায় না। গুনাহের গ্রীষ্মে তারা বেড়ে ওঠেন না। তারা আল্লাহকে এমনভাবে পবিত্র করলেন যে, তিনি তাদের গাদ্দারি ও ধোঁকাবাজিতে আক্রান্ত হতে না দেখেন। ... তাদের মাধ্যমেই মেঘমালা তৈরি হয়। আজাব-শাস্তি দূরভিত হয়। তাদের মাধ্যমে মানুষজন ও দেশ-তেপান্তর সিঞ্চিত হয়। তাদের ও আমাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।
জুন্নুন মিসরির কথাগুলো খলিফা মুতাওয়াক্কিলের হৃদয়ে প্রভাব ফেলে। তাতে তিনি সত্যতা ও দৃঢ়তার প্রমাণ পান। স্বস্তি ও প্রশান্তির পরশ অনুভব করেন। জুন্নুন মিসরি বাগদাদের কারগারে থাকাকালে খলিফ একটু পরপর তাকে ডেকে আনতেন। তার মুখে দুনিয়াবিমুখিতার কথা শুনতেন। এসব শুনে তার ঈমান, আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্তি বেড়ে চলতো। এমনকি মুতাওয়াক্কিলের ব্যাপারে একটি কথা প্রসিদ্ধ আছে যে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি এই লোকগুলো আল্লাহকে অবিশ্বাস করে, তাহলে পৃথিবীর বুকে কোনো মুসলিম নেই। ’ (আবদুল হালিম মাহমুদ, আল-আলিমুল আবিদ জুন্নুন আল-মিসরি, পৃষ্ঠা: ৩৫-৩৬)
জুন্নুন আল-মিসরি খলিফা ও সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সম্মান পেয়ে মিসরে ফিরে আসেন। ওই সময়টাতে তার পরিচিতি সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাসাউফের অঙ্গনে বড় ব্যক্তিত্ব ও ভ্রমণপ্রেমি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ভবঘুরে ও নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আল্লাহকে ডাকা এবং চিন্তাভাবনা ও কর্ম-দীপ্তির ব্যাপারেও আলোচনায় আসেন।
নদের তীর ও হঠাৎ সাক্ষাৎ...
একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়, একদিন তিনি নীল নদের তীর ধরে একাকী হাঁটছিলেন। সেখান থেকে মরুভূমির দিকে হাঁটা শুরু করলেন। পথিমধ্যে তার সঙ্গে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ হয়, যিনি তার কাছে রহস্য উদ্ঘাটন করেন। যে রহস্য সম্পর্কে তিনি খোঁজাখুজি করে আসছিলেন।
তাজকিরাতুল আওলিয়া কিতাবে রয়েছে, নদীর তীরে এক নারীর সঙ্গে জুন্নুন মিসরির সাক্ষাৎ হয়। সেই নারীকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘ভালোবাসার পরিণতি কী?’ সেই নারী বলেন, ‘হে মহাবীর! ভালোবাসার কোনো শেষ নেই। ’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কেন? বললেন, কারণ প্রেমাষ্পদের কোনো অন্ত নেই। (তাজকিরাতুল আউলিয়া: ১/১২৩)
জুন্নুন মিসরি অনুধাবন করতে পারেন যে, দুনিয়ার কোনো মূল্য নেই। বড়জোর এটি আল্লাহর একটি সৃষ্টি; এর বেশি কিছু নয়। তিনি বলতেন, ‘হে আমার প্রভু! আমার কানে জন্তুর শব্দ, গাছের পাতার মর্মর ধ্বনি, পানির কুলকুল স্রোত, পাখির মিষ্টি কুজন, বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজ, বজ্রের প্রবল শব্দ ইত্যাদি কেবল তোমার একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়। সেগুলো প্রমাণ করে তোমার মতো কেউ এবং কিছুই হতে পারে না। তুমিই একমাত্র বিজয়ী, তোমার ওপর কেউ বিজয় লাভ করতে পারে না। তোমাকে কেউ ভুলে থাকতেও পারে না। (আবু নুআইম, হিলয়াতুল আউলিয়া: ৯/৩৪২)
মৃত্যু ও আখেরাতের পথে
নব্বই বছর বয়সে জুন্নুন মিসরির মৃত্যু হয়। ২৪৫ হিজরি মোতাবেক ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে। দীর্ঘ এই জীবন-অধ্যায় জুন্নুন মিসরি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করে। তার মৃত্যু হয় মিসরের জিয়জা শহরে। জানাজার পর দাফনের জন্য তাকে ছোট ডিঙি নৌকায় করে নদী পার করানো হয়। তার লাখ লাখ অনুসারী ও ভক্ত-অনুরক্তের ভারে সেতু ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় সেতুতে তাকে তোলা হয়নি। মিসরের ফারাকাহ অঞ্চলে তাকে দাফন করা হয়।
সংক্ষিপ্ত লেখায় নিগূঢ় তত্ত্ব-আশ্রিত ও অলৌকিকতায় ভরপুর জীবনালেখ্যে বর্ণনা অসম্ভবপর। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা দান করুন।
-আল-জাজিরায় প্রকাশিত মুহাম্মদ শাবান আইয়ুবের ‘জুন্নুন আল-মিসরি... আস-সুফিয়্যুস সাইহ ফি আরদিল্লাহ’ লেখাটি অনুবাদ করেছেন মুফতি মুহাম্মাদ মিনহাজ উদ্দিন
ইসলাম বিভাগে আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন। লেখা ও জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এমএমইউ