ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মসজিদে নববী: মহানবী (সা.)-এর সব কাজ-কর্মের প্রাণকেন্দ্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
মসজিদে নববী: মহানবী (সা.)-এর সব কাজ-কর্মের প্রাণকেন্দ্র

রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর মসজিদে নববীকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়েছিল ইতিহাসের প্রথম মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার। মহানবী (সা.)-এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও অংশগ্রহণে ঐতিহাসিক এই মসজিদ গড়ে ওঠে।

সাহাবিদের দ্বীন শেখানো থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ তিনি মসজিদে নববীতে বসেই আঞ্জাম দিতেন। সাহাবিরা এখানেই তার কাছে কোরআন শিখতেন আবার এর প্রাঙ্গণে হতো যুদ্ধের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতিসভা।

.

মদিনায় হিজরত করার পর কুবা এলাকায় যাত্রাবিরতি দেন রাসুলে আকরাম (সা.)। সেখানে চার দিন অবস্থানকালে একটি মসজিদও নির্মাণ করেন। কুবা থেকে বিদায় নিয়ে তিনি বর্তমান মসজিদে নববীর এলাকায় এসে স্থায়ী হন এবং মসজিদ নির্মাণ করেন।

.

তৎকালীন সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এই মসজিদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পর খোলাফায়ে রাশেদার যুগ পর্যন্ত মসজিদে নববীই ছিল ইসলামী খিলাফতের প্রাণকেন্দ্র। এখান থেকে মুসলিম বিশ্ব পরিচালিত হতো।

.

রাসুলে আকরাম (সা.)-এর হাতে মসজিদে নববীর প্রতিষ্ঠা হলেও যুগে যুগে বহু সংস্কার ও সম্প্রসারণ হয়েছে এই মসজিদের। ফলে প্রতিষ্ঠাকালীন আয়তন এক হাজার ৫০ স্কয়ার মিটার থেকে বেড়ে বর্তমানে দুই লাখ ৩৫ হাজার স্কয়ার মিটারে দাঁড়িয়েছে।

.

সপ্তম হিজরিতে মসজিদে নববীর প্রথম সম্প্রসারণ রাসুল (সা.)-ই করেন। তখন আয়তন বেড়ে হয় দুই হাজার ৪৭৫ স্কয়ার মিটার। এরপর ওমর বিন খাত্তাব (রা.) (১৭ হিজরি) থেকে শুরু করে বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (১৪১৪ হিজরি) পর্যন্ত মোট আটবার মসজিদে নববীর সংস্কার ও সম্প্রসারণ হয়েছে।

.

৯১ হিজরিতে ওমর বিন আবদুল আজিজ (রহ.) খলিফা ওয়ালিদ বিন আবদুল মালেকের নির্দেশে মসজিদে নববীর সম্প্রসারণ করেন। এ সময় হজরত আয়েশা (রা.)-এর কক্ষটি মসজিদে নববীর অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তার ওপর নয়নাভিরাম সবুজ গম্বুজ স্থাপন করেন।

.

১৯০৯ সালে এই মসজিদের মাধ্যমেই আরব উপদ্বীপের বিদ্যুতায়ন শুরু হয়। বাদশাহ ফাহাদের যুগেই মসজিদে নববীর আধুনিকায়নের কাজ হয়। ১৪০৪ হিজরি (১৯৮৫ খ্রি.) থেকে ১৪১৪ পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছরের সংস্কার ও সম্প্রসারণে তা নতুন অবকাঠামো লাভ করে। এতে মসজিদের আয়তন বৃদ্ধি পায় ৮২ হাজার মিটার। যাতে প্রায় সাত লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারত। বাদশাহ ফাহাদ মসজিদে নববীতে নারীদের নামাজ আদায়ের জায়গা তৈরি করেন।

.

এছাড়াও মসজিদের বাইরের নিরাপত্তা দেয়াল, মসজিদ-প্রাঙ্গণের ছাতা, ইলেকট্রিক গম্বুজ, আধুনিক অজুখানা, নতুন মিনার, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, আধুনিক পাঠাগার ইত্যাদি সংযুক্ত হয়। বর্তমানে মসজিদে নববীতে ১০টি সুউচ্চ মিনার ও প্রায় ২০০টি ছোট-বড় গম্বুজ রয়েছে। তবে এই মসজিদের মূল আকর্ষণ মহানবী (সা.)-এর রওজায়ে আতহার, তার মিম্বর, কক্ষ, সবুজ গম্বুজ ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

......

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। বিষয়ভিত্তিক লেখা ও জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।