শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে যোগদান ও জাতীয় পেশাজীবী সমাজের আত্মপ্রকাশের পৃথক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, আইনে ছিল, ইংরেজি সাইনবোর্ড হলে নিচে বাংলা থাকতে হবে।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অনেকে আমাকে স্বৈরাচার বলেন। কিন্তু আমি কী স্বৈরাচারী করেছি খুঁজে পাই না। আমার রাষ্ট্রের দায়িত্ব (ক্ষমতা) নেওয়ার ইচ্ছা ছিল না, জাস্টিস ছাত্তারের অনুরোধে দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তিনি তখন দেশ চালাতে অপারগ ছিলেন। ’
‘আমি নির্বাচন দিয়ে ব্যারাকে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সবাই ভোট বর্জন করলো। তখন বাধ্য হয়ে দল গঠন করেছি। ’
এরশাদ বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন সামনে কি হবে। নির্বাচন হবে কি, হবে না, আদৌ বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি-না। আমাদের মনে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমরা ক্ষমতায় আসবো। এ জন্য ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন,‘দেশের মানুষ দুই দল থেকে মুক্তি চায়। তারা জাতীয় পার্টির যুগে ফিরে যেতে চায়। মানুষ সুখে শান্তিতে থাকতে চায়, নিরাপদে থাকতে চায়। জাতীয় পার্টি ছাড়া কোনো নিরাপদ স্থান নেই। আমাদের কাছে সবাই নিরাপদ, আওয়ামী লীগ- বিএনপিও নিরাপদ। দেশে হিংসার রাজনীতি চলছে। হিংসার রাজনীতি দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। ’
‘আমরা শান্তির রাজনীতি করি, উন্নয়নের রাজনীতি করি। জ্বালাও পোড়াও বিশ্বাস করি না, ধ্বংসের রাজনীতি বিশ্বাস করি না। যে কারণে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে জাতীয় পার্টি আজও বেঁচে আছে,’ বলেন পার্টি প্রধান।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ৬০ টাকা চালের দাম। ঢাকার বাইরে গিয়ে দেখেন কি অবস্থা! মানুষকে আধবেলা খেয়ে থাকতে হয়। সমস্ত খবর এখন ঢাকায়, মেট্রো রেল, ফ্লাইওভার। ঢাকার বাইরের খবর কেউ রাখে না।
এরশাদ বলেন, ‘আমি গ্রামে গিয়েছিলাম। লোকজন আমাকে বলেছে, আমি যেনো তাদের দুরাবস্থার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানাই। আমি বলেছি, কি করে জানাবো চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যায় না। আমি উনাকে (প্রধানমন্ত্রী) দোষ দিই না। ক্ষমতার মুকুট পরে সময় করা যায় না। ’
জাপায় যোগ দেওয়া পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের প্রথম কাজ হবে জনগণের সেবা করা। বাড়ি গাড়ি বানানোর জন্য নয়।
এরশাদ বলেন, এতোদিন আমাদের দলে কোনো পেশাজীবী ছিল না। তোমরা আসায় জাতীয় পার্টি শাক্তিশালী হলো। খবর পৌঁছে যাবে জাতীয় পার্টি শাক্তিশালী হচ্ছে। আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ডা. ফাহিম আল ফয়সাল ও ডা. জাফর মিয়ার নেতৃত্বে ৫৬ জন পেশাজীবী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় পেশাজীবীদের আহ্বায়ক কমিটি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন পার্টি প্রধান এরশাদ।
দ্বিতীয় পর্বে সাবেক মন্ত্রী মরহুম কোরবান আলীর ছেলে এম তারেক আলী এরশাদের হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, অ্যাড. শেখ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, যুগ্ম দফতর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮/আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা
এসআই/এমএ