ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

আইসক্রিম এলো যেভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
আইসক্রিম এলো যেভাবে

ঢাকা: ইয়াম্মি খাবার আইসক্রিম। আচ্ছা মুখরোচক এ খাবারটি কী করে আবিষ্কার হলো তা কি কেউ জানো? আইসক্রিম আবিষ্কারের ইতিহাস খুঁজতে গেলে ফিরে যেতে হবে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে।


যদিও আইসক্রিম আবিষ্কারের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা নির্দিষ্ট আবিষ্কারকের নাম নেই। কারণ এটি একবারে আবিষ্কার হয়নি।

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ফুলের মধুতে বরফ দিয়ে খেতে ভালোবাসতেন। এদিকে বাইবেলের রেফারেন্সে রয়েছে, রাজা সোলায়মান ফসল কাটার মৌসুমে বরফ পানীয় খেতে ভালোবাসতেন। আবার রোমান সাম্রাজ্যের সময়কালে নিরো ক্লডিয়াস সিজার (৫৪-৮৬ খ্রিস্টাব্দে) ঘন ঘন তুষার পর্বতে লোক পাঠাতেন। পরে তাদের আনা সেই বরফ ফল ও ফলের  রসের সঙ্গে পরিবেশন করা হতো। ধারণা করা হয় আইসক্রিম রেসিপির সূত্র এগুলোই।
 
এর এক হাজার বছর পর, মার্কো পোলো সুদূর প্রাচ্য থেকে ইতালিতে ফিরে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন একটি রেসিপি। যা এখনকার শরবতের মতো।

ইতিহাসবিদরা জানান, এই রেসিপিই ১৬ শতাব্দীতে আইসক্রিম হিসেবে পরিচিতি পায়। ইংল্যান্ড সম্ভবত ওই সময়ে বা তারও আগে আইসক্রিম আবিষ্কার করে। এরপর ১৭ শতাব্দীতে রাজা প্রথম চার্লসের টেবিলে রোজই দেখা যেতো ক্রিম আইস নামক একটি খাবার। ইতালিয়ান ক্যাথরিন ডে মেডিচি রাজা দ্বিতীয় হেনরিকে বিয়ে করার পর ফ্রান্সেও প্রায় একই টাইপের একটি ফ্রোজেন ডেজার্ট উপস্থাপিত হয়। সময়টা ১৫৫৩ সাল।

তবে ১৬৬০ সালের আগে আইসক্রিম সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য ছিলো না। এরপর প্যারিসের প্রথম ক্যাফে ‘ক্যাফে প্রকোপ’ দুধ, ক্রিম, মাখন ও ডিমের সংমিশ্রণে একটি রেসিপি উপস্থাপন করে।

আমেরিকায় আইসক্রিমের প্রথম সংস্করণ আসে ১৭৪৪ সালে। নিউইয়র্কে আইসক্রিমের প্রথম বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ১৭৭৭ সালের ১২ মে। তখন কনফেকশনার ফিলিপ লানজি ঘোষণা দেন, এটি প্রায় সবদিন শহরে পাওয়া যাবে।

নিউইয়র্কের চ্যাথাম স্ট্রিটের এক ব্যবসায়ী হিসাব করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন ১৭৯০ সালের গ্রীষ্মে আইসক্রিমের পেছনে প্রায় দুইশো ডলার খরচ করেছেন।
 
আঠারোশো শতক পর্যন্ত আইসক্রিম ছিলো অভিজাত শ্রেণীর প্রিয় ডেজার্ট। ওই শতকের আশেপাশে উৎপাদিত আইসক্রিম শিগগির একটি শিল্প হয়ে ওঠে। প্রযুক্তির উন্নয়নের পর অন্যান্য আমেরিকান ইন্ডাস্ট্রির মতো আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিতেও উৎপাদন উর্ধ্বগতিতে চলতে থাকে।

উনবিংশ শতাব্দীর শেষে আইসক্রিমের সহজলভ্যতা তুঙ্গে চলে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যোদ্ধাদের কাছে আইসক্রিম একটি ভোজ্য মনোবলের প্রতীক হয়ে ওঠে। ১৯৪৫ সালে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নাবিকদের জন্য প্রথম ভাসমান আইসকিম পার্লার তৈরি হয়। যুদ্ধ শেষে দুগ্ধজাত পণ্যের রেশন প্রত্যাহার করা হয় ও আমেরিকানরা আইসক্রিম দিয়ে বিজয় উদযাপন করে।

১৯৪০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আইসক্রিম উৎপাদন প্রায় একই হারে অব্যাহত ছিলো। বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও আইসক্রিম পার্লারে আইসক্রিম বিক্রি হতে শুরু হলো। আস্তে আস্তে মিষ্টি ডেজার্টের চাহিদা বাড়তে থাকে। যুক্ত হয় বিভিন্ন ফ্লেভার ও লুক।

বর্তমানে আইসক্রিম অত্যন্ত সহজলভ্য একটি খাবার। বিভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন ধরনের আইসক্রিম রাজত্ব করছে বিশ্বব্যাপী।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।