শোনেন শোনেন ভাই বোনেরা-শোনেন দিয়া মন
ষড়ঋতুর বাংলাদেশকে করিব বর্ণন।
শোনেন মন দিয়া ॥
ষড়ঋতুর এমন শোভা বিশ্বে কোথাও নাই
রূপের বর্ণন শুনলে তোমার প্রাণ জুড়াবে ভাই-
আমি পুথিক রাজা ॥
আমি পুথিক রাজা বলি সোজা- বাংলা বারো মাসে
ছয়টি ঋতু সাজে যেন অপরূপ সাজে
ঋতুর রাজা-বসন্তকাল ॥
আহা বসন্তকাল উদাস হাওয়ায়-কোকিলের গানে
গাছে নতুন কুঁড়ি ধরে হিমেল হাওয়া আনে
গাছে শিমুল ফোটে ॥
গাছে শিমুল ফোটে, হৃদয় লুটে-মন উদাসী হাওয়া
কৃষ্ণচূড়ার রঙিন শোভা-যেদিকে যায় চাওয়া
এরপর গ্রীষ্ম আসে ॥
আরে গ্রীষ্মকালে কাল-বৈশাখি ঝড়ে পড়ে আম
মধু মাসে ফলের রসে মহা ধুমধাম
সাথে গরম হাওয়া ॥
গরম হাওয়ার ধাওয়া খেয়ে গ্রীষ্ম গেলে পরে
প্রকৃতির এই রূপ পাল্টিয়ে বর্ষা ভর করে
দেশে বর্ষা নামে ॥
তারপরে ভাই বর্ষার কথা কি বলিব আর
আকাশ থাকে মেঘে ঢাকা-অঝর বৃষ্টির বাহার
দারুণ বর্ষাকালে ॥
আহা বর্ষাকালে জলে ভাসে হাওর, নদী, বিল
জলে শাপলা, গাছে কদম-কি অপরূপ মিল !
এরপর শরৎ আসে ॥
এরপর শরৎ আসে, মেঘাকাশে, কাশ ফুল ফোটে
সবুজ মাঠ, আকাশ নীলে মন কেড়ে নেয় লুটে
বাউল গায় মনের টানে ॥
শরতে ভাই শালুক কুড়ায় গ্রামের মেয়ে-ছেলে
ধানের ক্ষেত্রে বাতাস নাচে-দেখবে দু’চোখ মেলে
এরপর হেমন্তকাল ॥
আরে হেমন্ত কাল দারুন সকাল-নতুন ধানের গন্ধে
পিঠা পায়েস ধুমধাম- প্রাণ নাচে আনন্দে
কৃষক বেজায় খুশি ॥
এরপর শীত আসে-
আহা, সূর্য হাসা শীতের শিশির কি বলিব আর
হাঁড় কাঁপানো শীতে নামে খেজুর রসের ভাঁড়
গরিব কাঁপে শীতে ॥
বারো মাসে ছয়টি ঋতু-দুই মাস পর পর আসে
নতুন রঙে, নতুন রূপে-প্রকৃতি যে হাসে
দারুণ দেখতে লাগে ॥
আহা পুথিক রাজার সোজা কথায় শুনলে ঋতুর গান
বাংলা ছাড়া বিশ্বে কোথাও -নেই-এমন ঋতুর প্রাণ
দেশকে ভালোবাসো ॥
দেশকে ভালবাসো, বাসলে ভালো আমরা সবাই পারি
এক হলে পারিরে ভাই- একা হলেই হারি
সবাই ভালো থাক ॥
ষড়ঋতুর বাংলাদেশ, ঋতুর পড়া হইল শেষ
আহা বেশ, বেশ, বেশ-মোদের প্রিয় বাংলাদেশ ॥
থিম : বাংলাদেশের ঋতুচক্রের রূপবৈচিত্র্য এবং প্রাচীন গ্রামবাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুথি কবির- পুথি পাঠ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৩
এএ/আরকে[email protected]।