রবি। গ্রামের এক শান্ত ছেলে।
চা দোকানের সাত বছরের ছেলেটি নিয়ে তার অনেক চিন্তা। রিকশার প্যাডেল মারা ছোট্ট ছেলেটার কথা সবসময় ভেসে উঠে তার চোখের সামনে। চোখে পানি আসে ছোট্ট মেয়েটার মাথায় ইটের বোঝা দেখে। আর ভাবে, এদের জন্য কিছু একটা করা দরকার।
সবেমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সামনে বেশ কিছুদিন অবসর। এই অবসর সময়ে এই শিশুদের জন্য কিছু করা যায়। যেই ভাবা সেই কাজ। গ্রামের সেই সামাজিক সংগঠনটির সভায় এ বিষয়টা তুলে ধরল রবি। অবহেলিত এই শিশুশ্রমিকদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সবার সম্মতি মিলল। সিদ্ধান্ত হলো যে, অত্র সংগঠন সপ্তাহে দুই দিন এই শিশুদের জন্য অস্থায়ী স্কুল খুলবে।
সংগঠনের সদস্যরা প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবারে অবহেলিত শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা তথা বর্ণমালা, বানান অর্থাৎ বাংলা ভাষা লিখতে ও পড়তে শেখাবে। একই সঙ্গে শেখাবে প্রয়োজনমাফিক অন্য ভাষাও। প্রতি বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর স্কুলের একটি রুমে পাঠদান করা হবে। শুক্রবারে সকাল-বিকেল দু`বেলা পাঠদান করা হবে।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করলো সবাই। তিনি খুব খুশি হয়ে একটি রুম খোলা রাখতে রাজি হলেন। এমনকি সময় পেলে তিনিও মাঝে মাঝে পাঠদান করবেন বলে আশ্বাস দিলেন। সামনের বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে কর্মসূচি। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় তিনটি স্কুলে চলবে এ কর্মসূচি।
রবি আজ খুব খুশি। এই অবহেলিত শিশুগুলোর জন্য কিছু করতে পারছে সে। অন্তত কিছু শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে পারছে। এই ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, অনেক বড় হবে। অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি হবে।
জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেয়ার মানস রবিদের। রবির আলো ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। জাতি আজ তাদের মতো ছেলেমেয়েদেরই অপেক্ষায়...
ইচ্ছেঘুড়িতে লেখা পাঠান এই মেইলে: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৩
এমএনএন/এএ/বিএসকে