ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

উৎসব-আনন্দের নববর্ষ

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫
উৎসব-আনন্দের নববর্ষ

পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের দিনটি বাঙালিদের জন্য সবচেয়ে আনন্দময়, সবচেয়ে রঙিন উৎসব।

এই দিন বাঙালি জাতি পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে। পুরনো সব হিসাব-নিকাশ, চাওয়া-পাওয়ার তালিকা দূরে ঠেলে সবাই নতুন উদ্যমে নতুন বছরের দিনপঞ্জি খোলে।

অন্য সবার মতো নিশ্চয়ই তুমিও খুব আগ্রহ নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অপেক্ষায় থাকো, আনন্দ আর খুশিতে বরণ করে নাও নতুন বছর। আচ্ছা, এই যে আমরা পহেলা বৈশাখের জন্য এত প্রস্তুতি নিই, কখনো কি জানতে ইচ্ছে হয়েছে, কেন পহেলা বৈশাখই নববর্ষ হলো? অন্য কোনো দিন কেন হলো না?

এ প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অবশ্য অনেক অনেক আগের কথা বলতে হবে। আসলে সম্রাট আকবরের আমল থেকে পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। সেসময় সম্রাট খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। প্রাচীন কিছু বর্ষপঞ্জিকার সাহায্যে তৈরি করা হয় বাংলা বর্ষপঞ্জিকা।

আকবরের আমল থেকেই চৈত্র মাসের শেষদিনের মধ্যে খাজনা দিতে হতো। এর পরদিন জমির মালিকেরা নিজেদের এলাকার অধিবাসীদের মিষ্টি খাওয়াতেন। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা ‘হালখাতা’ করত, অর্থাৎ নতুন হিসাবের খাতা খুলত। তখন মূলত হালখাতারই উৎসব ছিলো পহেলা বৈশাখ। এরপর ধীরে ধীরে নানা সংস্কার ও সংযোজনের পর বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয় এটি।

এখন কিন্তু বাংলা একাডেমি পহেলা বৈশাখের দিন নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগে দু-একদিন আগে পরে হলেও এখন ইংরেজি বর্ষের ১৪ এপ্রিল বাংলা বছর শুরু হয়।

বিভিন্ন দেশে নববর্ষ উদযাপনের বিভিন্ন রীতি আছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনেরও আছে নিজস্ব ঐতিহ্য। পহেলা বৈশাখে লাল-সাদা পোশাক পরার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এছাড়া এদিন পান্তা-ইলিশ খাওয়া আমাদের ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয়েছে।

নানা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ উদযাপন করি। বৈশাখী মেলা নববর্ষের একটি অন্যতম প্রধান আয়োজন। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম আয়োজনের মাধ্যমে নববর্ষ বরণ করা হয়। এসব ঐতিহ্যবাহী আয়োজনের মধ্যে রয়েছে নৌকাবাইচ, ষাঁড়ের লড়াই, কুস্তিখেলা ইত্যাদি।

এছাড়া প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠান বাংলা নববর্ষ উদযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে নানা রঙের মুখোশ নিয়ে বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে। এই শোভাযাত্রা ছাড়া বর্ষবরণ পূর্ণতা পায় না। এছাড়াও আরো নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালি বরণ করে নেয় নতুন বছরকে।

আজ বৈশাখ মাসের প্রথম দিন। বাংলা নববর্ষ। ১৪২১ সালকে বিদায় দিয়ে দুয়ারে পা রেখেছে ১৪২২। নতুন বছর সবার জন্য বয়ে আনুক শান্তি, সমৃদ্ধি আর আনন্দ। বছরের প্রতিটা দিন হোক আনন্দময়, কল্যাণময়। তোমাদের সবাইকে নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।