ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

গুচ্ছছড়া | চন্দনকৃষ্ণ পাল

ছড়া/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
গুচ্ছছড়া | চন্দনকৃষ্ণ পাল

তাল কি গোল হয়
নাকি চার কোণা?
তাল গোল পাকিয়েছে
রুনা আর মোনা।

রুনা বলে তাল হলো
বেগুনের ভাই,
মোনা বলে তাল দিয়ে
ভর্তা যে খাই।



হাউ কাউ চুলোচুলি
দুই জনে মিলে
ভীষণ আওয়াজ ওঠে
চমকায় পিলে।

এখন কিছুই নেই

আমার একটা আকাশ ছিলো নীল,
শুভ্র আলো গায়ে মেখে উড়তো শঙ্খচিল।
আজ আকাশে ধূয়োর উড়ে চলা,
বিষাক্ত গ্যাস, ধূলিকণার কতো কথা বলা।

আমার একটা নদী ছিলো সত্যি,
তার প্রবাহে গতি ছিলো থামতো না একরত্তি।
আজ নদীতে বিশাল বিশাল চর,
উজান দেশের দত্যিগুলি ঘর ভেঙেছে ঘর।

আমার ছিলো একটা বিশাল বন,
পাখ-পাখালি দেখে ভালো থাকতো আমার মন।
আজ সেখানে ধূ ধূ প্রান্তর
বন কেটে আজ বানায় সবাই নিজের বাড়ি ঘর।

আমার এখন কিছুইতো নেই দেশে,
দত্যিরা সব কেড়ে নিলো হেসে।

গিট্টু মামার বাঁদর

একটি বাঁদর ভেঙচি কাটে
একটা দেখায় লেজ
গিট্টু মামা রেগে বলেন
ভাঙচি তোদের তেজ।

এত্তো বড় সাহস তোদের
আমার সাথে রঙ্গ
এমন টাইট দেবো তোদের
ছাড়তে হবে বঙ্গ।

মামার কথা শুনে তারা
সিটি বাজায় জোরে
মামার রাগ বাড়ে আরো
হট্টগোলের তোড়ে।

বাঁদররা যে মানুষ নয়
মামাতো যান ভুলে,
রাগের চোটে খাঁচার দুয়ার
হঠাৎই দেন খুলে।

তিনি
১.
ভোট এলে কার
কপাল থেকে
হাত নামেনা,
সকাল দুপুর
সন্ধ্যে বিকেল
পা থামেনা।
২.
মুখটা কেবল
হাসতে থাকে
ইচ্ছে মতো,
চাচা-মামা
গ্রামের লোক
আছেন যতো।
৩.
ভোট এলে কার
পিছু ছোটে
ছেলে পেলে,
সাদা কালো
টাকা ছড়ান
দুহাত মেলে।
৪.
ভালো মানুষ
সাজেন সাদা
পাঞ্জাবিতে,
মুখে তুলেন
ফেনা, ভাষণ
দিতে দিতে।

রাত ও বিষণ্ন কিশোর

সারাটা আকাশে একটাই চাঁদ আর কোনো কিছু নেই,
নিঝঝুম রাত চরাচর ঘুমে মৃদু আলো ঝরছেই।
হালকা কুয়াশা হিম ছুড়ে দেয় মাঠ আর প্রান্তরে
সব মানুষেরা ওম শুষে নিয়ে শুয়ে আছে ঘরে ঘরে।
অনিন্দ্য এই রূপ পৃথিবীর কজন মানুষ জানে?
গভীর রাতে ঘোর লাগা চোখে তাকায় আকাশ পানে।
বয়ে চলে নদী রুপালি জলের ঢেউ ভেঙে ভেঙে পড়ে
জমানো শিশির গাছ হতে নীচে কালচে ঘাসেতে ঝরে।
শিউলী ছড়ায় রাতের বাতাসে মোহময় প্রিয় ঘ্রাণ
একটি কিশোর জানালায় বসে, ঘ্রাণে ভরে তার প্রাণ।
ঘুম নেই এই কিশোরের চোখে মন ছুটে যায় দূরে
জানেনা কোথায় নিজেকে হারায় কোন সে অচিনপুরে।
বিষণ্নতা বুকের ভেতর ডালপালা মেলে শুধু
চাঁদের আলোয় গাছ-নদী-মাঠ হয় মরুভূমি ধূ ধূ।
রাত কেটে যায় জানে না সে হায়, কিশোর বসেই থাকে
অজানা রং আর স্বপ্ন তুলিতে সে শুধুই ছবি আঁকে।
শিশির বিন্দু ঘাসের ডগায় করে যদি টলোমল
কিশোরের দুই দীঘল চোখেতে জমে উঠে লোনা জল।

স্বপ্ন সকাল

নাচছে ময়ূর পেখম তুলে
দেখে খোকন হাসে
কদম ফুলের স্বর্ণ রেনু
হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসে।

সূর্য মামার হলুদ আদর
কপাল ছুঁয়ে যায়,
ঘুম পরিরা চলে গেছে
দূরের কোন গাঁয়।

ময়ূর কোথায় কাকের কাকা
সারা সকাল জুড়ে,
স্বপ্নে দেখা ময়ূর কনে
হারিয়ে গেছে দূরে।

নীল পায়রা

স্বপ্নপুরীর নীল পায়রা
মেললো ডানা বুঝি
উড়ে গেলো ধূসর বনে
এখন কোথায় খুঁজি।

নীল পায়রা যেয়ো নাতো
সবুজ বাংলা ছেড়ে
তুমি গেলে স্বপ্ন আমার
নেবে শকুন কেড়ে।

জলপাই এর পাতা মুখে
পায়রা তুমি এসো
পথের পাশের খোকনটাকে
একটু ভালোবেসো।

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।