জ্যাক কাঁটা ঝোপের মধ্যে ছোট্ট একটা জায়গায় শিম বোনে। সে বলে ওরা কাঁটা ঝোপের মধ্যে বেড়ে উঠতে পারবে এবং ওদের দেখে এখানে কেউ আছে সম্ভবত তা কেউ বুঝে উঠতে পারবে না।
কখনও কখনও দিন, তারিখ ও বার মনে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ে। জ্যাক গণনা করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে এবং কোনো কোনো দিন রোববার শিশুরা ডানদিক থেকে বাতাসে ভেসে আসা চার্চের ঘণ্টা বেজে ওঠার শব্দ শুনতে পায়।
‘রোববারগুলোকে আমাদের বিশ্রাম আর শান্তির দিন হিসেবে পালন করা উচিত, মাইক বলে। আমরা চার্চে যেতে পারছি না, কিন্তু একটা দিনকে আমরা কল্যাণকর হিসেবে পালন করতে পারি, আমি কী বলতে চাইছি যদি তোমরা তা বুঝে উঠতে পারো।
ওরা তাই রোববারগুলোতে শান্ত থাকতে শুরু করে এবং ছোট্ট দ্বীপটাকে এদিনে অতিরিক্ত শান্তিময় বলে মনে হতে থাকে। অন্য দিনগুলো ওরা ঠিক টের পায় না- সেটা মঙ্গল, বৃহস্পতি বা বুধবারই হোক না কেন! কিন্তু রোববার এলেই জ্যাক তাদের সেটা মনে করিয়ে দেয়, আর তাই এই একটা বারের কথাই ওরা জানতে পারে। নোরা বলে দিনটার আলাদা একটা অনুভূতি রয়েছে। মনে হয় রোববার এলে ছোট্ট দ্বীপটা আপনা থেকেই সেটা টের পায়, তখন চারপাশটা কেমন স্বপ্নীল আর শান্ত হয়ে আসে।
একদিন জ্যাক বলে, পাহাড়ের আশপাশের গুহাগুলো ঘুরে ঘুরে ওদের সবার চিনে রাখা দরকার।
যদি কেউ আমাদের এখানে খুঁজতে আসে এবং একদিন না একদিন তা ঘটবেও, সে বলে। তখন কী করতে হবে এবং কোথায় গিয়ে লুকাতে হবে, সবকিছু আমাদের আগেভাগেই ঠিক করে রাখা দরকার। সত্যিই যারা আমাদের খোঁজে এখানে আসবে তারা কিন্তু বেড়াতে আসা সেই লোকেদের মতো সৈকতের ওপর বসে থাকবে না, তা তো তোমরা জানোইÑ ওরা পুরোটা দ্বীপ তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখবে।
তাহলে চলো গুহাগুলো ঘুরে দেখে আসা যাক, মাইক বলে। আমি বাতি নিয়ে আসছি।
তাই হাতে লণ্ঠন দোলাতে দোলাতে এবং সেটা ধরাতে পকেটে একটা ম্যাচ রেখে জ্যাক সবাইকে নিয়ে গুহার দিকে এগিয়ে যায়। বাচ্চারা পাহাড়ের পাশে তিনটে খোলা মুখ খুঁজে পায়। এর একটাতে একবার মুরগি রাখা হয়েছিল, পরেরটা সবচেয়ে বড়, আর তৃতীয়টা এতো ছোট যে সেটার ভেতর হামাগুঁড়ি দিয়ে ঢোকাও কষ্টকর।
আমরা বড়মুখটা দিয়ে ঢুকব, জ্যাক বলে। সে লণ্ঠনটা ধরায় এবং অন্ধকার গুহার ভেতর ঢুকে পড়ে। জুনের আলো ঝলমল দিনটাকে এভাবে হঠাৎ বাইরে ফেলে আসায় সবকিছু খুব অস্বাভাবিক বলে মনে হয়। নোরা কেঁপে ওঠে। ভাবে গুহা বুঝি এমনই অদ্ভুত জিনিস। তবে মুখে কিছুই বলে না, শুধু মাইকের গা ঘেঁষে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এএ