ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

কুকুর, বিড়াল ও ইঁদুরের গল্প | সুমন বিশ্বাস

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
কুকুর, বিড়াল ও ইঁদুরের গল্প | সুমন বিশ্বাস প্রতীকী ছবি

শিয়াল চিনতে অসুবিধা না হলেও বিড়াল ও বনবিড়াল চিনতে কুকুরটির বেশ সমস্যা হতো। বিড়াল ও বনবিড়ালে গুলিয়ে যেত কুকুরের ব্রেনটা। বিড়ালের সঙ্গে বন্ধুত্ব না থাকলেও কোনো শত্রুতা ছিল না তার। কিন্তু শিয়াল ও বনবিড়াল কুকুরের বড় শত্রু।

কারণ দু’টি। এক. কুকুরের বাচ্চাগুলো শিয়াল ও বনবিড়ালে খেয়ে ফেলে।

বিড়াল কিন্তু কাজটি কখনোই করে না। দুই. কুকুর মূলত মানুষের দরদি ও পরোপকারী বন্ধু। মানুষ হাঁস-মুরগি পোষে। শিয়াল ও বনবিড়াল সুযোগ পেলেই সেগুলো খেয়ে ফেলে। মানুষের অনিষ্ট করে বলেই ওরা কুকুরের শত্রু। মানুষের অনিষ্ট সে কখনই হতে দিতে চায় না। রাত জেগে বাড়ি পাহারা দেয়। আর মানুষ সুখের ঘুম ঘুমায়।

একদিন সে শুয়ে শুয়ে ভাবছে। বিড়াল ও বনবিড়াল নিয়ে যে সমস্যা তার একটা বিহিত হওয়া উচিত। সে বিড়ালকে ডাক দিলো। তার সমস্যা ও মনের কথা সব খুলে বললো। একটা সমাধানের কথাও বললো। শুনে বিড়াল রাজি হলো। কুকুরের সঙ্গে বিড়ালের বন্ধুত্ব তৈরি হলো। তারা একসঙ্গে খেলা করে, খায়।

তখন বর্ষাকাল। বিড়াল কুকুরকে বললো, বন্ধু আমার খুব মাছ খেতে ইচ্ছে হয়। নতুন জলের নতুন মাছ খেতে ভারি মজা। চলো না আমরা মাছ ধরি। কুকুর বন্ধুর কথায় রাজি হলো। তারা একটা জাল বুনলো। মাছ ধরলো। অনেক মাছ। বিড়াল খুব মজা করে মাছগুলো খেলো। কুকুর বিড়ালকে বললো, বন্ধু আমারও খুব ক্ষুধা পেয়েছে। আমাকেও কিছু খেতে হবে। আমার খাবারের ব্যবস্থা করো।

বিড়াল বললো, খেয়েদেয়ে আমার আর নড়ার কায়দা নেই। একটু আয়েশ করি। ঘুম আসছে। ঘুমাবো। একথা শুনে কুকুরের খুব রাগ হলো। বললো, বন্ধু তোমার জন্য আমি এত কষ্ট করলাম, আর তুমি আমার জন্য একটু খাবারের ব্যবস্থা করবে না। বিড়াল মনে মনে ফন্দি আঁটলো। শুকানোর জন্য রোদে নেড়ে দেওয়ার কথা বলে সে জাল দিয়ে কুকুরকে আটকে দিলো। কুকুর বললো, তুমি আমার বন্ধু হয়ে এমন কাজ করতে পারো না। বিড়াল বললো, তুমি অনেক হাড্ডি খেয়েছো, আমাকে দাওনি। তোমাকে আজ ছাড়বো না। আজ থেকে সব আমি খাবো। এই বলে বিড়াল জালের পাশে বসে কুকুরের মজা দেখছিল।

সন্ধ্যা ঘোর হয়ে এলো। ইঁদুর তার গর্ত থেকে বেরুলো। দেখলো কুকুরের আর্তনাদ। সব শুনে ইঁদুরের মায়া হলো। সে ইঁদুরের জাল কেটে দিলো। কুকুর ছাড়া পেয়ে বিশ্বাসঘাতক বলে বিড়ালকে তাড়া করলো। বিড়াল আজও দৌড় কালও দৌড়। তারপর বিড়াল এক ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়লো। কুকুর জিভ বের করে হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়িতে ফিরে এলো। এদিকে বিড়াল ইঁদুরের উপর ভীষণ রেগে গেলো। গভীর রাতে বিড়াল ইঁদুরকে তাড়া করলো। সেই থেকে বিড়াল ইঁদুরের শত্রু। আর কুকুর আর বিড়ালের শত্রুতা সেভাবে না থাকলেও বন্ধুত্ব আগের মতো থাকলো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।