ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯১)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯১) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
ওওওহ্! পানিতে ঝাঁপ দেওয়ার সময়, নোরা বলে। হ্রদে গোসল করতে খুব শীত শীত লাগে, জ্যাক। সারাটা শীত কি আমাদের এভাবেই কাটাতে হবে?

অবশ্যই না, জ্যাক বলে। কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের এসব বাদ দিতে হবে।

তবে যথেষ্ট গরম থাকলে ভালোই লাগে।
সেই সপ্তাহে আবহাওয়া সত্যি সত্যি ভয়ানক হয়ে ওঠে। হ্রদের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়, পাক খাওয়া বড় বড় ঢেউ এসে সৈকতের ওপর আছড়ে পড়ে। তখন বাচ্চাদের কাছে সেটাকে সাগরের মতোই মনে হয়। সৈকত জুড়ে ঢেউয়ের লম্ফঝম্ফ শুরু হয়। আর তাই সেখানে আগুন ধরানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজে যায় এবং বড় গুহার বাইরে ধরানো আগুনের আঁচে বসে যতটা পারা যায় তাদের ভেজা কাপড় সব শুকিয়ে নিতে হয়। আগুন ধরাবার জন্য এটা খুব ভালো একটা জায়গা, কারণ সেখানে বাতাস সাধারণত বিপরীত দিকে বয় এবং আগুনটা পাহাড় দিয়ে সুরক্ষিত।

আমার ধারণা এবার আমাদের উইলো বাড়ি ছেড়ে গুহায় গিয়ে থাকা উচিত, খুব ঝড়ো একটা রাত শেষে একদিন সকালে জ্যাক বলে। বাতাস সারারাত গাছগাছড়া ধরে টানা হ্যাঁচড়া করেছে। একনাগাড়ে বৃষ্টি পড়েছে। আর বাচ্চাদের হতাশ করে, সেই অবাধ্য বৃষ্টির জল ঘরের পেছন দিয়ে ভেতরে ঢুকে ঘুমন্ত নোরা আর পেগির গুল্মের বিছানা ভিজিয়ে দিয়েছে। তাই মাঝরাতে ওদের বিছানা ছেড়ে সামনের কামরায় এসে বসে থাকতে হয়েছে, যেখানে ছেলেরা ঘুমাচ্ছিল। খানিকটা চাপাচাপি হলেও সামনের ঘরটা শুকনাই ছিল।  

গাছের পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে। সব গাছগাছড়া আর ঝোপজঙ্গল আগুনের হলদে, টকটকে লাল, গোলাপি বা কমলা শিখার মতো রং ধারণ করে। সূর্য ওঠার পর দু’এক ঘণ্টা পর্যন্ত দ্বীপটিকে খুব মনোরম দেখায়, কেননা এর রশ্মিগুলো চারদিকের দীপ্তিময় পাতাগুলোকে আলোকিত করে তোলে, আর তা রাতের মতো আভার বিচ্ছুরণ ঘটায়। কিন্তু এখন পাতারা ঝরে পড়তে শুরু করেছে।

যে শাখাগুলো উইলো বাড়ির ছাদ তৈরি করেছে ওদের পাতা ঝরে পড়তে থাকে। রাতে বিছানায় শুয়ে থাকার পর মুখের ওপর আলতো করে কোনো পাতা এসে পড়লে তখন খুব মজা লাগে। ছাদ আর দেয়োল জুড়ে খুব কম সংখ্যাক সবুজ আর হলদে পাতার কারণে উইলো বাড়িটিকে দেখতে এখন একেবারে অন্যরকম লাগে। বাড়িটা এখন নগ্ন আর বাদামি।

নোরার ঠাণ্ডা  লাগায় সে হাঁচি দিতে শুরু করে। জ্যাক বলে ওদের তখনই গুহায় চলে যাওয়া উচিত, তা না হলে সবার ঠাণ্ডা লাগতে পারে- আর ওরা অসুস্থ হলে, তখন কী হবে? সারিয়ে তোলার জন্য তো আর ডাক্তার পাওয়া যাবে না!

ওরা নোরাকে গরম গরম দুধ খেতে দেয়। নতুন দু’টি কম্বল দিয়ে সারা গা জড়িয়ে রাখে। নতুন এই কম্বল দুটা জ্যাক গ্রামের হাট থেকে কিনে এনেছিল। ওরা তাকে বাইরের গুহার ভেতরের দিকে নিয়ে রাখে, ওদিকটায় আবছা অন্ধকার বলে পাশে একটা লণ্ঠন জ্বেলে দেয়। মেয়েটা দ্রুত সেরে ওঠে এবং সবাই মিলে গুহায় বসবাসের পরিকল্পনা করবার সময় সেও বুদ্ধি দিয়ে অন্যদের সাহায্য করে।  

বাইরের এই গুহাটিকে আমরা বসার ঘর আর শোবার ঘর হিসেবে ব্যবহার করবো! জ্যাক বলে। আর ওই ভেতরেরটা হবে আমাদের ভাঁড়ার ঘর।  

ঢুকবার পথে আমাদের সব সময় আগুন জ্বালিয়ে রাখতে হবে এবং ওটা আমাদের গরম রাখবে। আর খাবার-দাবার রান্না করতে কাজে আসবে। আবারও খানিকটা মজা হবে! এই শীতে আমরা হবো গুহাবাসী!

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।