ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৪)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৪) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
ছেলেটা সবকিছু শোনে এবং এ ব্যাপারে কিছু একটা করবে বলে মনে মনে ঠিক করে রাখে। বড়দিনের আগেই সে নৌকা নিয়ে বৈঠা বেয়ে লেকের শেষ মাথায় যাবে। এখনও তার কাছে কিছু টাকা রয়ে গেছে এবং সেটা দিয়ে সে রঙিন পটকা, নোরার জন্য একটা পুতুল, পেগির জন্য নতুন একটা সেলাই কাজের বাক্স, মাইকের জন্য কিছু একটা ও সামান্য কমলা আর মিষ্টি কিনবে! ওদের সবার খুব সুন্দর একটা বড় দিন পাওনা রয়েছে!

এ নিয়ে সে অন্যদের কিছুই বলে না। সে জানে ওরা ভীষণ ভয় পাবে, ভাববে বুঝি আবারও ধরা পড়বে।

তবে এবার সে আগের সেই গ্রামে যাবে না। এবার সে হেঁটে পাঁচ মাইল দূরের অন্য একটা গ্রামে যাবে যেখানে কেউ তাকে চিনতে পারবে না। সেখানে গিয়ে তার দরকারি জিনিসপত্র সব কিনবে। সে নিশ্চিত অতিরিক্ত সতর্কতার কারণে এবার খুব নিরাপদেই থাকবে!

ডিসেম্বর গড়িয়ে যেতে থাকে। দিনগুলো খুব মেঘাচ্ছন্ন আর বিষণ্ন। একদিন সকালে জ্যাক নৌকায় ওঠার বুদ্ধি আঁটে। অন্যদের বলবে গরম হবার জন্য একটু নৌকা করে ঘুরে আসতে চাইছে। তাদের জন্য বিশাল যে চমক নিয়ে আসবে এ নিয়ে সে কাউকে কিছুই বলে না!

ভালো একটা দিন আসে যখন শীতের মলিন সূর্যটা রোদ ছড়ায় এবং আকাশটা জলজ নীল রঙে ছেয়ে যায়। নাস্তার পর পেগি ধোয়া-মোছা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাইক ডেইজির জন্য আবারও একটা ছাউনি বানাতে যাবে, আগেরটা এরই মধ্যে বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। নোরা পাইনের কোন কুড়াতে যাবে।  
তুমি কী করতে চাইছো, জ্যাক? পেগি জিজ্ঞেস করে।  

ওহ্, জ্যাক বলে। আমার ইচ্ছে করছে পুরনো নৌকাটা নিয়ে ঘুরে এসে একটু গরম হয়ে নেওয়া যাক। অনেক দিন হলো বৈঠা বাওয়া হয় না!
আমি তোমার সঙ্গে আসছি জ্যাক, নোরা বলে।  
কিন্তু জ্যাক চায় না কেউ তার সঙ্গে যাক! না, নোরা, সে বলে, তুমি গিয়ে পাইনের কোন কুড়িয়ে নিয়ে এসো যাও। আমার বেশ দেরি হবে। পেগি, সঙ্গে নেওয়ার জন্য তুমি কি আমাকে কিছু খাবার দিতে পারবে?
খাবার! অবাক হয়ে পেগি বলে। তুমি কত দূর যেতে চাইছ, জ্যাক?

ওহ্, এই তো ঘণ্টা খানেক, জ্যাক বলে। সামান্য ব্যায়ামে আমার উপকারই হবে। সঙ্গে আমি আমার ছিপটিও নিচ্ছি।
আচ্ছা, তাহলে ওভারকোটটাও নিতে ভুলো না, পেগি বলে; ঝড়ো হ্রদের বাতাসে তোমার ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।
সে একটা ঝুড়িতে কয়েক বোতল দুধের সঙ্গে, বেশ কয়েকটা রোল আর একটি সিদ্ধ ডিম দেয়। জ্যাক বিদায় জানিয়ে পাহাড়ের ঢাল বরাবর নামতে শুরু করে। নৌকায় করে ঘুরতে নিয়ে যাবে না বলে নোরা গোমড়া মুখে তার পিছু নেয়।  
আমাকে নিয়ে যাও জ্যাক, সে বলে।  

আজ তোমাকে সঙ্গে নেওয়া যাবে না নোরা, জ্যাক বলে। কেন, সেটা আমার ফিরে আসার পরই জানতে পারবে! 
সে ধাক্কা দিয়ে লেকের দিকে বৈঠা বাইতে শুরু করে। সেদিন লেকটা খুব শান্ত ছিল। সে খুব দ্রুত বৈঠা বাইতে শুরু করে এবং নোরা দ্রুত বেলাভূমি ছেড়ে পাইন কোনের খোঁজে চলে যায়। ভাবে কিছুক্ষণ বাদে সে দেখতে চেষ্টা করবে জ্যাক কোথায় বড়শি পেতে মাছ ধরছে। একেবারে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে ওঠে- তবে অনেক চেষ্টার পরও নৌকার টিকিটিও নজরে আসে না। ব্যাপারটা তার কাছে খুব অবাক লাগে।  

ঘণ্টা পেরিয়ে যায়, জ্যাক তবু ফিরে আসে না। অন্যেরা তার অপেক্ষা করে। অবাক হয়ে ভাবে ছেলেটা কেনো এভাবে একা বেরিয়ে পড়লো, আর কেনোই বা এখন ফিরে আসছে না।  
তোমার কি মনে হচ্ছে কিছু একটা আনতেও আবারও গ্রামের দিকে গেছে? শেষে পেগি জিজ্ঞেস করে। নোরা বলছে লেকের কোথাও সে ওর নৌকা দেখতে পায়নি- আর কাছাকাছি কোথাও বড়শি পাতলে তো খুব সহজেই ওকে আমরা দেখতে পেতাম! 

ওহ্, প্রিয়! চিন্তায়, মাইক বলে। গ্রামে গেলে তো এবারও সে ধরা পড়বে!
কিন্তু জ্যাক মোটেই ধরা পড়ে না। অন্যরকম কিছু একটা ঘটে- খুব অসাধারণ একটা ঘটনা ঘটে!

চলবে….

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর০৪, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।