ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

পাখি চিনি

বনের সুন্দর পাখি বনমোরগ

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২২
বনের সুন্দর পাখি বনমোরগ

বনমোরগ দেখতে খুবই সুন্দর। মুরগিরা আকারে একটু ছোট।

মোরগ দেখতে বেশি সুন্দর। খুব চালাক পাখি এরা। বাংলাদেশের সুন্দরবন ও পাহাড়ি বিভিন্ন বনে সংখ্যায় কমলেও দেখা যায় এখনও।

এদের মাথায় চমৎকার খাঁজকাটা ফুল। গলার নিচের থলতলে চামড়া, চোখের চারপাশ, বোজানো অবস্থায় ডানা, যেখানে লেজের গোড়ায় শেষ হয়েছে সেখানটাসহ পিঠের কিছু অংশের রং সোনালি-লাল বা সোনালি হলুদ।

কান সাদাটে। ঠোঁট থেকে চোখের নিচ দিয়ে চওড়া কালচে-কমলা টান কানের গোড়ায় এসে মিশেছে। মাথার পেছন দিকের চমৎকার পেলব পালকগুলোর রং হলুদাভ-সোনালি। ঘাড়-গলার বাহারি পালকের রং একই রকম। পিঠ-বুক কালো। পায়ের রং ঘন বাদামি। নখ ছুরির মতো ধারালো। এদের লেজের গড়ন আরও সুন্দর।  

বনমোরগের ইংরেজি নাম Red Jungle Fowl। বৈজ্ঞানিক নাম Gallus Gallus। শরীরের মাপ ৬০-৭০ সেন্টিমিটার। মুরগির মাপ ৪০-৫০ সেন্টিমিটার। এদের গড়ন পোষা মোরগের চেয়ে একটু লম্বাটে। এই বনমোর-মুরগি হলো পৃথিবীর সব ধরনের পোষা মোরগ-মুরগির আদি বাবা-মা। বাংলাদেশের সুন্দরবন ও পাহাড়ি সব বনে এদের দেখা যায়।  

এদের খাদ্যতালিকায় আছে কচি ঘাস-পাতার ডগা, যে কোনো ধরনের শস্যদানা, পোকা-পতঙ্গ, ছোট মাছ ও ব্যাঙ, নির্বিষ ও বিষধর ছোট সাপ, কেঁচো, ছোট কাঁকড়া, অঞ্জন, টিকটিকি, কাঁচা মরিচ, কচি বেগুন ইত্যাদি।  

সুন্দরবনে এরা বাসা বানায় ঘাস, শুকনো কেয়া পাতা, গোলপাতা দিয়ে। দলবেঁধে চলাফেরা করে। এদের শিকার করা খুবই কঠিন। অত্যন্ত চালাক এবং বুদ্ধিমান এরা। মাটিতে বুক-পেট ঠেকিয়ে ঝোপঝাড়ের তলায় বা গাছের আড়ালে আত্মগোপন করতে ওস্তাদ। যেন ভালো দৌড়াতে পারে তেমন পারে উড়তে।  

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
১. বনমুরগির বাচ্চা ধরে পোষ মানানো যায় না। কিছুই খায় না। সুযোগ পেলেই পালায়।  
২. পোষা মুরগির মতো বনমুরগিও বাসা করার পর ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার আগে ডাকাডাকি করে, একাই ডিমে তা দেয়। তা দেওয়ার সময় মুরগির শরীর ফুলে থাকে, মেজাজ থাকে খারাপ।  
৩. বিপদ দেখলে সংকেত দিতে এরা ওস্তাদ। খুব ভোর, নির্জন দুপুর আর সন্ধ্যায় ডাকাডাকি করে। রাত কাটায় বাঁশঝাড় বা গাছের ডালে।  
৪. তিন-চার দিনে এরা বাসা সাজায়। প্রতিদিন একটি করে ডিম পাড়ে। মোট পাড়ে ৫-৬টি ডিম। ১৯-২০ দিনে বাচ্চা ফোটে। সব বাচ্চা ফুটলে বাসা ছেড়ে দেয়, আর ফেরে না।  
 
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের পাখি, শরীফ খান

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।