কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার খোকসায় খাবারে সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পাঁচ বছরের সন্তানকে হত্যার দায়ে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সৎ মা নাসিমা বেগমকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এই রায় দেন। এ সময় আসামি সশরীরে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত নাছিমা বেগম কুষ্টিয়ার কুমারখালীর উপজেলার চর ভাবনিপুর গ্রামের উন্তার মৃধার মেয়ে এবং খোকসা উপজেলার আমবাড়ীয়া গ্রামের বাদশা প্রমানিকের দ্বিতীয় স্ত্রী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৮ বছর আগে দুই সন্তান রেখে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ায় কুমারখালী উপজেলার চর ভাবনিপুর গ্রামের উন্তার মৃধার মেয়ে নাছিমা বেগমকে বিয়ে করেন খোকসা উপজেলার আমবাড়ীয়া গ্রামের হাচেন প্রমানিকের ছেলে বাদশা প্রমানিক। এরপর তার আগের পক্ষের শ্বশুর দুরুদ আলী বাদশার দুই সন্তান শাহীন (৫) এবং রায়হানকে (৭) তার কাছে নিয়ে লালন পালন করতে থাকেন। ২০০৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঈদ উপলক্ষে জামা কেনার জন্য দুই সন্তানকে বাদশার বাড়িতে দিয়ে যান শ্বশুর দরুদ আলী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরের দিন দুপরে ছোট ছেলে শাহিনকে (৫) ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেন বাদশার দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা বেগম।
এ সময় শাহিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরদিন শাহিনের বাবা বাদশা প্রমানিক বাদী হয়ে খোকসা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নাছিমা প্রতিহিংসার কারণে সৎ ছেলে শাহিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি একমাত্র আসামি নাছিমার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খোকসা থানার এসআই হাবিবুর রহমান। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, ৮ জানুয়ারি, ২০২৩
এমএমজেড