ফরিদপুর: হত্যাচেষ্টা মামলায় ফরিদপুরে দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একই মামলায় পাঁচ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছাড়ের আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চান্দু শেখ (৪২), মনির শেখ (২৮), সাইফুল শেখ (২০), সাইদুল শেখ (২৫), বক্কার শেখ (৫৫), কালাম শেখ (৫০) ও রাকিবুল শেখ (২০)।
সাত আসামির মধ্যে চান্দুকে পাঁচ বছর ও মনিরকে দুই বছর কারাদণ্ড এবং বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আদালতে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোসাদ্দেক হোসেন বশির। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) উমা রানী দাস।
রায়ের পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোসাদ্দেক হোসেন বশির বলেন, ‘আসলে ৩২৬ ধারার মামলায় দীর্ঘ সাজা হয় এমন নজির খুব কম। অপরাধীদের সাজা না হলে তারা আরও বেপরোয়া হয়। তাই এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হত্যার উদ্দেশে কাউকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করলে যে ছাড় পাওয়া যাবে না, এ রায়ে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। ’
রায়ের পর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি উমা রানী দাস বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি। অপরাধী যেন ছাড় না পান এটাই রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশ্যে। আর এ রায় সমাজের জন্য একটা বার্তা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে জেলার নগরকান্দা উপজেলার আশফরদী গ্রামে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ চান্দু শেখের নেতৃত্বে মনির শেখ ও আরও কয়েকজন মিলে বাদী ছালাম শরিফের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। সে সময় বাড়িঘর ভাঙচুর চালালে এতে বাধা দেন মামলার বাদী ছালাম শরিফ ও তার ভাই বাবলু শরিফ। পরে চান্দু শেখ রামদা দিয়ে বাবলু শরিফের মাথায় কোপ দিলে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে মনির শেখ ছেনদা (দেশীয় ধারালো অস্ত্র) দিয়ে সোহাগ শরিফের মাথায় আঘাত করলে গুরুতর জখম হয়।
এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের একাধিক সদস্যকে লাঠি-সোঁঠা দিয়ে উপর্যুপুরি মারধর করা হয়। পরে গুরুতর আহত বাবলু শরিফ ও সোহাগ শরিফকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে উভয়ের মাথায় ১১টা সেলাই দিতে হয় এবং দীর্ঘদিন হাসপাতালের বিছানায় পড়ে থাকতে হয়। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে দীর্ঘ তদন্ত শেষে নগরকান্দা পুলিশ আসামিদের দোষী করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেন। ২০২১ সালে আদালত চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন। পরে দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
এসআরএস