ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে স্ত্রী নন্দিনীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় স্বামী মো. মামুন মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।

 

রায় ঘোষণার সময় মামলার একমাত্র আসামি মো. মামুন মিয়া (৩৩) পলাতক ছিলেন।  

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মামুন মিয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলী ইউনিয়নের গাগলাইল গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে।

মামলার এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাগলাইল গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে মো. মামুন মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার তারাপাশা এলাকার মিনার আলম খানের মেয়ে নন্দিনীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ করে সংসার জীবন শুরু করেন। কিছুদিন পর স্বামী মামুন স্ত্রী নন্দিনীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন। স্বামীর নির্যাতনের কথা নন্দিনী তার মাকে জানালে তার মা গোপনে মামুনকে কিছু টাকা দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে মামুন আবারও নন্দিনীকে তার বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনতে বলেন। নন্দিনী বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে মামুন নন্দিনীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে ২০ এপ্রিল মামুন তারাপাশা এলাকার দিদার মিয়ার ভাড়া বাসায় স্ত্রী নন্দিনীর কাছে আবারও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। নন্দিনী টাকা এনে দিতে পারবে না জানালে মামুন নন্দিনীকে মারধর করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান।  

প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় নন্দিনীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনার পাঁচদিন পর ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নন্দিনীর মৃত্যু হয়।

নন্দিনীর মৃত্যুর সময় তাদের আট মাস বয়সের একটি মেয়ে ছিল। এ ঘটনায় নন্দিনীর বাবা মিনার আলম খান বাদী হয়ে স্বামী মামুনকে একমাত্র আসামি করে ১ মে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফজলুল হক আদালতে একমাত্র আসামি মো. মামুন মিয়ার নামে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতের বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।  

কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজল মামলার রায়ের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।