লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে পর্নোগ্রাফি মামলায় জহিরুল ইসলাম খোকন (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামি খোকনের তিন বছরের কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পর্নোগ্রাফি মামলার বাদী ১৬ বছর বয়সী একজন কিশোরী। দণ্ডপ্রাপ্ত খোকন প্রবাসফেরত বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, মামলার বাদী সম্পর্কে আসামির মামাতো বোন। আত্মীয়তার সম্পর্কের জেরে খোকন তার মামাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। সেই সুযোগে ২০১৭ সালের প্রথম দিকে বাদীকে ঘরে একা পেয়ে জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অচেতনের পর মোবাইলফোনে অশ্লীল ছবি ধারণ করেন খোকন। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বাদীর আরও অশ্লীল ভিডিও ও ছবি নেয়।
২০১৯ সালের ১৭ আগস্ট একইভাবে বাদীর উদ্দেশে তার মায়ের মোবাইলফোন নাম্বারে বিভিন্ন কু-প্রস্তাবমূলক ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠান খোকন। এর ছয় মাস আগে এক প্রবাসীর সঙ্গে বাদীর বিয়ে হয়ে যায়। এর চার মাস পরই তার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এতে খোকন পুরনো অশ্লীল ছবি ও ভিডিওগুলো তার স্বামীকে দেবে বলে হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কু-প্রস্তাব দেয়।
এদিকে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ছবি ও ভিডিওগুলো খোকন ওই মেয়ের স্বামীর ইমো নাম্বারে পাঠিয়ে দেয়। তখন বাদী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপরও আসামির কু-প্রস্তাব চলতে থাকে। একপর্যায়ে ছবি ও ভিডিওগুলো আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় খোকন। ২৭ নভেম্বর ভুক্তভোগী কিশোরী বাদী হয়ে থানায় খোকনের নামে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে আসামি খোকনকে অভিযুক্ত করা হয়। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির তিন বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এএটি