ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর বাড্ডা থানার মামলায় আত্মসমর্পণ করেই জামিন পেয়েছেন বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধর।
রোববার (০৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর।
শুনানিতে তিনি বলেন, নিখিল রঞ্জন ধর প্রশ্নফাঁস করেননি। তার কাছ থেকে কেউ প্রশ্ন পায়নি বা নেয়নি। আর তিনি কোনো টাকাও নেননি। বয়স্ক মানুষ, জটিল রোগে আক্রান্ত। যে কোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত দুই হাজার টাকা বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ সময় নিখিল রঞ্জন ধর আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধর পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর শামীম আহমেদ আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর এই তদন্ত কর্মকর্তা অধ্যাপক নিখিলকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছিলেন, আদালতে দেওয়া আসামি দেলোয়ারের জবানবন্দি অনুযায়ী ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সন্দিগ্ধ আসামি ড. নিখিল রঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার বিষয়ে জড়িত থাকার কোনো তথ্য না পাওয়া যায়নি। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলার দায় প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।
মামলার অপর আসামিরা হলেন—প্রশ্নফাঁসের হোতা আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান রয়েল, অফিস সহায়ক (পিয়ন) দেলোয়ার হোসেন, কর্মী রবিউল আউয়াল, জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে-আলম মিলন, পূবালী ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল জাবের ওরফে জাহিদ, পারভেজ মিয়া, মিজানুর রহমান মিজান, মোবিন উদ্দিন, সোহেল রানা, পরীক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম স্বপন, রাশেদ আহমেদ বাবলু, জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ ও রবিউল ইসলাম রবি।
২০২১ সালের ৬ নভেম্বর দুপুর ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এক হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর চাকরি প্রত্যাশীদের অনেকেই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তোলেন।
এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর তেজগাঁও জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর সুকান্ত বিশ্বাস বাড্ডা থানায় মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৩
কেআই/এমজেএফ