ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৩
স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী নীলা আক্তারকে (৩২) ঘুমের মধ্যে গলাটিপে হত্যার দায়ে স্বামী মো. সুমন উদ্দিনকে (৩৭) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

সোমবার (৬ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
 
রায়ের সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পর থেকে তিনি কারাবন্দি।  

দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন লক্ষ্মীপুরে রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের হাজি কেরামত আলী সওদাগর বাড়ির নাছির উদ্দিনের ছেলে।  

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, সুমন উদ্দিন নরসিংদী জেলায় চাকরি করতেন। সে সুবাদে নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দ্রি ইউনিয়নের বাগহাট্টা গ্রামের মৃত ওমর আলীর মেঝো মেয়ে নীলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালে পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে নীলার পরিবার মেনে নেয়নি। পরে নীলাকে নিয়ে লক্ষ্মীপুরে রামগতির বড়খেরীতে নিজেদের বাড়ি চলে আসেন। সুমনের পরিবারের সঙ্গে বিয়েকে কেন্দ্র করে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এজন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে তারা বড়খেরী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাদুর পুতগো বাড়ির আহম্মদ উল্যা ভূঁইয়ার বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সুমন রামগতি বাজারে একটি চায়ের দোকান করতেন। তবে সংসারে অভাব অনটনের কারণে নীলার সঙ্গে তার ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সুমন দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরলে নীলা ঢাকায় যাওয়ার জন্য তার কাছে বাস ভাড়া চান। কিন্তু টাকা দিতে ব্যর্থ হন সুমন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এর জের ধরে রাতেই ঘুমের মধ্যে নীলাকে গলাটিপে হত্যা করেন সুমন। পরে মৃতদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে ভেতর দিয়ে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং সুমনকে আটক করে। পরে পুলিশ নীলার ভাই মাহবুবুর রহমানকে মেবাইল ফোনে ঘটনাটি জানায়। তিনি এসে রামগতি থানায় সুমনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

২০২১ সালের ২৭ জুলাই আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেন রামগতি থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) অলি উদ্দিন। এতে তিনি সুমন উদ্দিনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে অজ্ঞাত আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, মামলার শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সোমবার এ রায় দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।