রাজশাহী: শেখ কামাল বাংলাদেশ যুব গেমস থেকে ফেরার পথে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশ কনস্টেবল দম্পতিকে মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাকি সাত খেলোয়াড়কেও জামিন দিয়েছেন আদালত। বিকেলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের জামিনে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই খেলোয়াদের পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক মো. লিটন হোসেন জামিন মঞ্জুর করেন। একই মামলায় গ্রেফতার মোট ১২ খেলোয়াড়ের মধ্য অন্য পাঁচজনকে সোমবার জামিন দেওয়া হয়েছিল। তাদের বয়স আঠারো বছরের কম হওয়ায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছিল।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাইনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে নামার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুব খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন এক পুলিশ কনেস্টবল ও তার স্ত্রী। তাদের দাবি, ঢাকা থেকে যুব গেমস খেলে ফেরার পথে রাজশাহীর কুস্তি দল ট্রেনের ভেতরে তাদের মারধর করেছে।
এ ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্যের নাক ফেটে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। মারধরের অভিযোগ এনে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া রাজশাহী রেলওয়ে থানায় ১৩ জন খেলোয়াড়কে আসামি করে মামলা করেন। পরে মীমাংসার কথা বলে নিয়ে যাওয়া ১২ খেলোয়াড়কে এ মামলায় গ্রেফতার দেখায় রেলওয়ে থানা পুলিশ। ওই মামলায় প্রথম দিন পাঁচ জন এবং আজ দ্বিতীয় দিনে সাতজন জামিন পেলেন বলে জানান আসামি পক্ষের ওই আইনজীবী।
আজ জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর পাচানি মাঠ এলাকার আলী আজম (১৯), হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার আকাশ আলী মোহন (২০), একই এলাকার আব্দুল আল জাহিদ (১৬), জিন্নানগর এলাকায় আহসান কবীর (৪৫), নিউ কলোনি এলাকার ফারহানা খন্দকার (১৭), কয়েরদাড়া এলাকার রিমি খানম (১৭), জেলার মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট এলাকার খাদিজা খাতুন (১৮), রাজশাহী মহানগরীর বখতিয়ারবাদ মালদা কলোনি এলাকার পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), ছোটবনগ্রাম উত্তরপাড়ার দিপালী (১৯), বড় বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাবরিনা আক্তার (১৯), একই এলাকার জেমি আক্তার (১৪), মহানগরীর শাহ মখদুম থানার মোড় এলাকার বৃষ্টি মণি (১৬) এবং হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার রমজান (১৯)। এর মধ্যে রমজান ছাড়া বাকিরা গ্রেফতার হয়েছেন।
এছাড়া সোমবার জামিন পেয়েছে আব্দুল আল জাহিদ (১৬), ফারহানা খন্দকার (১৭), রিমি খানম (১৭), জেমি আক্তার (১৪) ও বৃষ্টি মণি (১৬)। বাকি সাত জন আজ জামিন পেলেন।
আসামি পক্ষের পরিবারগুলোর দাবি ওই পুলিশ সদস্যই আগে এক খেলোয়াড়কে থাপ্পড় মেরেছিলেন। তারপরই ঘটনার সূত্রপাত। এরপর বিষয়টি রেলওয়ে থানায় নিয়ে মীমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ সদস্যের স্ত্রী খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে মামালা দায়ের করেন। আর রেলওয়ে পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে এ মামালায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
আজ এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতারা বক্তব্য দেন।
এ বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে শেখ কামাল বাংলাদেশ যুব গেমসে অংশ নেওয়া রাজশাহীর উদীয়মান খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন>>
>> কনস্টেবল পিটিয়ে গ্রেফতার ১২ খেলোয়াড়ের মধ্যে ৫ জনের জামিন
>>‘৯৯৯’-এর কনস্টেবলকে পিটিয়ে গ্রেফতার ১২ খেলোয়াড়
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৩
এসএস/আরআইএস