সিলেট: সিলেটে পাথর ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা ও চেক ডিজঅনারের ২টি মামলায় খালাস পেয়েছেন রিজেন্ট সাহেদ।
সোমবার (২৭ মার্চ) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে দায়ের করা প্রতারণা তিনি খালাস পান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. আবদুস সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে প্রতারণার দায়ে একটি ও চেক ডিজঅনারের ৩টি মামলা দায়ের করেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা।
দায়ের করা তিনটি চেকের মামলা সিলেটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এবং প্রতারণার দায়ে করা মামলাটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন ছিল। ১০ লাখ টাকা আত্মসাত ও প্রতারণায় দায়ে করা সিআর মামলায় দেড় লাখ টাকাসহ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করায় বাদীপক্ষ মামলা নিস্পত্তির সিদ্ধান্ত নেন। ওই টাকা সাহেদ তার আইনজীবীর মাধ্যমে পরিশোধ করেছেন বলেও জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী।
এরই প্রেক্ষিতে আজ সর্বশেষ কিস্তির টাকা বাদীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে আদালতে বিষয়টি উত্তাপন করলে বিচারক বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবির বক্তব্য শুনে আসামিকে সিআর-২৮/’২১ মামলা থেকে খালাস দেন।
অ্যাডভোকেট মো. আবদুস সাত্তার বলেন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিন মামলার একটি থেকে গত সপ্তহে সাহেদ খালাস পান। অপর ২টি মামলার রায় হবে তার উপস্থিতিতে আগামি ২ মে।
করোনা চিকিৎসায় প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার বহুল আলোচিত সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে মামলা হয়। সিলেট জৈন্তাপুর উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী ‘মাওলা স্টোন ক্রাশার মিল’র সত্ত্বাধিকারী শামসুল মাওলা ১০ লাখ টাকার একটি ভুয়া চেক দিয়ে (চেক নম্বর-৯০২৬৪৬৩০) পাথর কিনে নেওয়ার প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
এরও আগে ২০২০ সালের ৪ মার্চ সাহেদের বিরুদ্ধে সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেকের বিপরীতে তিনটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন এই ব্যবসায়ী। ওই বছরের ৮ নভেম্বর সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে শুনানি শেষে সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন তৎকালীন বিচারক হারুনুর রশিদ।
ওই সময় ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ঢাকায় গিয়ে সাহেদের সঙ্গে দেখা করলে পদ্মাসেতু প্রকল্পের জন্য পাথর সরবরাহের বড় একটি কাজ পাইয়ে দেবেন বলে তাকে আশ্বাস দেন। সাহেদ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পিএস বলেও পরিচয় দেন। এক পর্যায়ে তার কথায় বিশ্বাস করে ৩০ লাখ টাকার পাথর সরবরাহের চুক্তি করেন সাহেদ।
পরে ঢাকায় বিল আনতে গেলে তাকে ১০ লাখ টাকা করে ৩০ লাখ টাকার তিনটি চেক ধরিয়ে দেন সাহেদ। পরদিন ব্যাংকে চেক ডিজঅনার হয়। এমনকি চেকগুলো তার নিজের অ্যাকাউন্টেরই নয়, ব্যাংকে গিয়ে প্রমাণ পান।
গত বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে বেরিয়ে আসে করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট, অর্থ আত্মসাৎসহ প্রতারণার বিষয়টি। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেওয়া হয়। অভিযানের খবরে সাহেদ পালিয়ে যান। গত বছরের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ র্যাবের জালে ধরা পড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এনইউ/এসএ