ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচার ব্যবস্থার মূল সমস্যা বিলম্বিত বিচার: বিদায়ী বিচারপতি বসির উল্লাহ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
বিচার ব্যবস্থার মূল সমস্যা বিলম্বিত বিচার: বিদায়ী বিচারপতি বসির উল্লাহ

ঢাকা: হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ বলেছেন, আমাদের দেশে বিচার ব্যবস্থার মূল সমস্যা হচ্ছে বিলম্বিত বিচার। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোর্টের আদেশ ও নথি দ্রুত সময়ে সংশ্লিষ্ট স্থানে না পৌঁছানো।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবসে নিজের বিদায় সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন এই বিচারপতি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল, সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এনামুল হক মোল্লাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

৪১ বছরের বিচারিক জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার অবসরে যান বিচারপতি এএনএম বসির উল্লাহ। মোট বিচারিক জীবনের ১৩ বছর হাইকোর্টে এবং বাকিটা সময় অধস্তন আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে এবং আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনার জবাবে বিচারপতি বসির উল্লাহ বলেন, বিলম্বিত বিচার প্রসঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারি সংসদে যা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনারা তা জানেন। কিন্তু তার এই কঠিন উপলব্ধির প্রায় ৪৮ বছর পরও অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না।

বিচারপতি বসির উল্লাহ বলেন, বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে প্রায় ৫ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন আছে। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে যে সংখ্যক বিচারপতি আছেন, তারা যদি শুধু এই মামলাগুলো নিষ্পত্তি করেন তাতেও ১০ বছর সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু শুধু বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি করলে চলবে না, প্রতি বছর গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মামলা হাইকোর্ট বিভাগে যুক্ত হচ্ছে। সে মামলাও নিষ্পত্তি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার বিবেচনায় নিষ্পত্তি হার বাড়াতে হলে সর্ব প্রথম বিচারপতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া অন্তবর্তীকালীন যে আদেশ আমরা দেই, হতে পারে সেটি স্থগিতাদেশ বা আস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। এই অন্তবর্তীকালীন আদেশ কোনভাবেই সীমাহীন সময়ের জন্য চলতে দেওয়া উচিৎ নয়। তার একটি সর্বোচ্চ সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। সেটি হতে পারে, ৫ কিংবা ১০ বছর। এই সময়সীমার মধ্যে মূল প্রসিডিং এর শুনানি বা নিষ্পত্তি না করলে অন্তবর্তীকালীন আদেশের কার্যকারিতা লোপ পাবে। এই রকম বাধ্যবাধকতা থাকলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মামলা শুনানি করার তাগিদ অনুভব করবে।

১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন বসির উল্লাহ। ১৯৮১ সালে মুনসেফ হিসেবে বরিশালে যোগদানের মাধ্যমে বিচারিক জীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ পদে থাকা অবস্থায় হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১২ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩ 
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।