ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন প্রথম আলোর সম্পাদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২৩
হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন প্রথম আলোর সম্পাদক

ঢাকা: রমনা থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।

রোববার (২ এপ্রিল) সকালে এ আগাম জামিন আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।

গত ২৯ মার্চ রাতে মামলাটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক (মশিউর মালেক)।

এই মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান, সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামাদেরও আসামি করা হয়েছে।

মামলায় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান কারাগারে রয়েছেন।

মামলার বাদী এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, তিনি গত ২৬ মার্চ রাত ৯টায় শিল্পকলা একাডেমির মূল গেইটে থাকাকালীন ফেসবুক ব্রাউজ করার সময় দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনের একটি নিউজের স্ক্রিনশট দেখতে পান।

স্ক্রিনশটে দেখা যায়, জাকির হোসেন নামে একটি দিন মজুর শিশুর বক্তব্য উল্লেখ করে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান একটি প্রতিবেদন করেছেন। প্রতিবেদনের শিরোনাম- পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।

নিচে লেখা জাকির হোসেন, দিনমজুর, সাভার। বাদী এই খবরটি দেখে বিস্মিত হন বলে জানান এজাহারে।

এজাহারে বাদী আরও বলেন, পরে ২৮ মার্চ রাত ১০টার দিকে তার মোবাইল ফোনে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ৭১ টিভির প্রতিবেদক ফারজানা রূপার একটি প্রতিবেদন চোখে পড়ে। প্রতিবেদন থেকে তিনি জানতে পারেন, প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে উল্লিখিত প্রতিবেদনটি দেখে ফারজানা রূপা ঘটনা সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে নামেন। অনুসন্ধানে তিনি সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় গিয়ে প্রতিবেদনে কথিত জাকির নামে শিশুটিকে খোঁজ করেন।

তিনি প্রথম আলো অনলাইনে প্রদর্শিত জাকির নামীয় শিশুটির ছবি স্থানীয় লোকজনদের দেখিয়ে প্রতিবেদনের শিশুটিকে খুঁজে বের করেন। পরে শিশুটির বাড়িতে যান। সেখানে তিনি জানতে পারেন শিশুটির নাম জাকির নয়, তার নাম সবুজ। বয়স সাত বছর, সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

শিশুটিকে প্রথম আলোর প্রতিবেদন ও তার ছবি দেখালে সে জানায়, একজন লোক স্বাধীনতা দিবসের দিন নিজেকে প্রথম আলোর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাকে ১০ টাকা দিয়ে ক্যামেরায় ছবি তুলে। শিশুটিকে ওই ব্যক্তি তার নাম বা কোনো কিছুই জিজ্ঞেস করেননি এবং তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।

বাদী এজাহারে বলেন, আমি ফারজানা রূপার এই প্রতিবেদন দেখে মনে মনে আতঙ্কগ্রস্ত হই এবং আমার মনে পড়ে যে, ১৯৭৪ সালে কুড়িগ্রামের বাসন্তি নামে একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মহিলাকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করে জনমনে দুর্ভিক্ষের আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এই কথা মনে পড়ে যাওয়ায় আমি শঙ্কিত হয়ে পড়ি যে, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলো তাদের অনলাইন ভার্সনে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে একটি মিথ্যা ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, আমি আরও বুঝতে পারি যে, প্রথম আলোর সম্পাদকের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় ওই প্রতিবেদক তার অজ্ঞাতনামা ক্যামেরাম্যান ও মুদ্রণ সহযোগীদের নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত ও হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে বুধবার (২৯ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ এনে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২৩
ইএস/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।