ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এহসান গ্রুপের মুফতি রাগীবকে জামিন দেননি হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৩
এহসান গ্রুপের মুফতি রাগীবকে জামিন দেননি হাইকোর্ট

ঢাকা: গ্রাহকদের আমানতকৃত অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের তিন মামলায় পিরোজপুরের মাল্টিপারপাস কোম্পানি এহসান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাগীব আহসানকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।

বুধবার (৫ এপ্রিল) বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার পৃথক তিনটি আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।

মুফতি রাগীব আহসানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।  

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, এহসান গ্রুপের মালিক মুফতি রাগিব আহসানের বিরুদ্ধে ১০১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার মানিলন্ডারিং মামলায় তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।  

রাগিব আহসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে একটি হলো, তার পরিচালনাধীন এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের জমা ভাউচার মূলে (বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে আনা) অধিক মুনাফার প্রলোভনে বিভিন্ন মেয়াদে ৯১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৩ টাকা জমা দেন। পরবর্তী সময়ে তারা মুনাফাসহ জমাকৃত টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন সময় টালবাহানা করতে থাকেন। এভাবে তারা গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে তাদের পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দেন।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকার একটি বাসা থেকে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব ও তার ভাই বাশারকে আটক করেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা। আর রাগীবের অন্য দুই ভাই মাহমুদুল ও ইরুলকে পিরোজপুরের খলিশাখালী নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার রাগীব হাসান ছিলেন একটি মসজিদের ইমাম। পরে ঢাকার একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিতে কাজ নেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেই গড়ে তুলেন এহসান গ্রুপ নামে একটি এমএলএম কোম্পানি। সেখানে নিয়োগ দেন জেলাসহ জেলার পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট, ঝালকাঠী, গোপালগঞ্জ, পটুয়াখালী, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার মসজিদের ইমাম, কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালীদের। তারা মাহফিলের মাধ্যমে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। এ সংগৃহীত আমানত দিয়ে ২০০৮ সালে পিরোজপুর পৌরসভার খলিশাখালী এলাকায় এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠা করেন রাগীব। এরপর পৌর শহরের সিও অফিস মোড় সংলগ্ন এলাকায় জমি কিনে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন। যা ‘এহসান গ্রুপ’ নামে পরিচিতি। ওই এহসান গ্রুপ নামে ১৭টি প্রতিষ্ঠান খুলে প্রায় ২২ হাজার কর্মীর মাধ্যমে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। আর এসব আমানতের বিপরীতে প্রতি লাখে ২ হাজার টাকা করে ব্যবসায়িক লাভ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সংস্থাটি।  

রাগীবের ১৭টি প্রতিষ্ঠানগুলো- এহসান গ্রুপ বাংলাদেশ, এহ্সান পিরোজপুর বাংলাদেশ (পাবলিক) লিমিটেড, এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমেটেড, নূর-ই মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট একাডেমি, জামিয়া আরাবিয়া নূরজাহান মহিলা মাদরাসা, হোটেল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক), আল্লাহর দান বস্ত্রালয়, পিরোজপুর বস্ত্রালয়-১ ও ২, এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডিং অ্যান্ড কোং, মেসার্স মক্কা এন্টারপ্রাইজ, এহসান মাইক অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম, এহসান ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস, ইসলাম নিবাস প্রজেক্ট, এহসান পিরোজপুর হাসপাতাল, এহসান পিরোজপুর গবেষণাগার ও এহসান পিরোজপুর বৃদ্ধাশ্রম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২৩
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।