বরিশাল: নৌকার কর্মীদের পিটিয়ে জখমের মামলায় বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়কসহ ১৩ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২১ মে) বরিশাল মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে তার জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী।
বিচারিক হাকিম আল ফয়সাল জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের (জিআরও) এসআই মো. হুমায়ন কবির।
তিনি জানান, আজ আদালতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ১৩ জনের জামিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রিমান্ডের আবেদনের শুনানি দিন ধার্য ছিল। মহানগর হাকিম জামিন ও রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
এসআই হুমায়ন কবির বলেন, আগামী ৬ জুন পুলিশি প্রতিবেদনের জমা দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে। মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নাসহ কারান্তরীণ ১৩ জনের জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর।
এদিকে মান্নাসহ আসামিদের আদালতে চত্বরে আনা হলে তাদের অনুসারীরা সেখানে জড়ো হয়। পরে প্রিজন ভ্যান ঘিরে নৌকা নৌকা বলে স্লোগান দেয় মান্নার
অনুসারীরা। এসময় মান্নাকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। ১৪ মে রাতে নগরীর কাউনিয়া মহাশশ্মানের সামনে বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের চার কর্মীকে মারধর করা হয়। এতে আহত হয়ে তিনজন বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ওই রাতেই পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ জন ও র্যাব তিনজনকে আটক করে।
হামলায় গুরুতর আহত নৌকার কর্মী মনা আহম্মেদ বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের কাউনিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী রইজ আহম্মেদ মান্নাসহ নামধারী ২১ জন অজ্ঞাতপরিচয় ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতায় পথরোধ করে খুনের উদ্দেশ্যে সাধারণ ও গুরুতর জখম করাসহ হত্যার হুমকি ও সহায়তা করার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বাদী অভিযোগ এনেছেন, সোহাগ নামে এক নৌকার কর্মীকে ৭ মে অস্ত্র, রামদা, হকিস্টিক প্রদর্শন করে হুমকি দিয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় কাউনিয়া মহাশশ্মান এলাকায় নৌকার প্রচারণা করতে যান। এ সময় মামলার প্রধান আসামি মান্নার হুকুমে তার ছোট ভাই নাদিম পিস্তল মাথায় আঘাত করেন। এতে তার মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় অন্যান্য আসামিরা তাকেসহ হালিম ও জাহিদকে রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে আহত করেছেন। পরে দুই নম্বর ওয়ার্ডে নৌকার প্রচারণা করার হুমকি দেয়। একই সঙ্গে নৌকার প্রচারণা করলে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আসামিরা।
কারান্তরীণ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নগরীর দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রইজ আহমেদ মান্নার ছোট ভাই রিসাদ আহম্মেদ নাদিম (২৫), আর আর এফ পুলিশ লাইনস এলাকার বাসিন্দা পারভেজ হাওলাদার (৩২), নগরীর এক নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গবন্ধু কলোনির বাসিন্দা শান্ত ইসলাম (২৪), এক নম্বর ওয়ার্ড কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান সম্পদ (৩০), একই এলাকার মিজানুর রহমান শাওন (২৫), নগরীর দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মামুন হাওলাদার (৩৬), এক নম্বর ওয়ার্ডের আল আমিন হাওলাদার (২৮), একই এলাকার রাসেদ হাওলাদার (২৫), কাউনিয়া প্রথম গলির বাসিন্দা ইমরান হোসেন সজিব (৩০), কাউনিয়া জানুকি সিংহ রোডের ফাহিম (২২), কাউনিয়া কালাখার বাড়ির সুমন হাওলাদার (২৯) এবং দুই নম্বর এলাকার নান্টু সন্যামত (৫৩)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক হরিদাস নাগ প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এমএস/এএটি