ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের ল’ চেম্বার ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ছয় কোটি টাকা কর ফাঁকির দাবির বিষয়ে আপিল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (০৫ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল নিষ্পতি করে আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রমজান আলী শিকদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
পরে সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান, ইনকাম ট্যাক্সের বিষয়ে আপিল করার ক্ষেত্রে আইনের বিধান হচ্ছে, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হয়। এ টাকাটা জমা না দেওয়ায় আপিলটা খারিজ হয়ে গেছে। এরপর ওই খারিজের বিরুদ্ধে রিট করেন। রিট বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তারা টাকাটা জমা দিয়েছেন। আদালত রুল নিষ্পত্তি করে এখন আদেশ দিয়েছেন, মামলাটা অন মেরিটে তিন মাসের মধ্যে (ট্যাক্স ট্রাইব্যুনালে) নিষ্পত্তি করতে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক ডেপুটি কমিশনার ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এক নোটিশে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস থেকে ছয় কোটি নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করেন।
তার আগে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এক কোটি চার লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে। কিন্তু ওই অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০ কোটি ১১ লাখ চার হাজার ২১৯ টাকা মোট আয় দেখিয়ে ছয় কোটি নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করে।
রাজস্ব বোর্ডর ডেপুটি কমিশনারের ওই কর দাবির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। ওই আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন তা খারিজ করে আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর যুগ্ম কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ট্যাক্সেস আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে। সেটি খারিজ হওয়ার পর কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষে আইনজীবী শরীফ এম এন ইউ ভূইয়া গত বছরের ২৪ মে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের শুনানির পর একই বছরের ২১ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নোটিশের কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন। সেই রুলের নিষ্পত্তি করে সোমবার (০৫ জুন) রায় দেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২১ জুন আদেশের পর আইনজীবী রমজান আলী শিকদার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তাদের (এনবিআর) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করতে হলে মোট দাবির ওপর ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। সেই অনুযায়ী ৮৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলাম। এরপর আমরা হাইকোর্টে রিট করি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের অ্যাসেসমেন্টের পর নির্দেশনা অনুযায়ী আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা করি। এখন ১০ শতাংশ পূরিপূর্ণ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
ইএস/এমজেএফ