ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যা: ৫ জনের ফাঁসি, ১৪ জনের যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যা: ৫ জনের ফাঁসি, ১৪ জনের যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে যুবলীগ নেতা মামুনুর রশিদ হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বুধবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।

এ মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে দুজনকে।

রায়ের সময় আদালতে দুই আসামি উপস্থিত ছিলেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাব মিয়ার ছেলে মো. মধু (৩৫) ও তার ভাই মো. শামীম (৪০), একই উপজেলার বারিয়াধর গ্রামের বারেক মাস্টারের ছেলে মো. মামুন (৩৭), পূর্ব দেলিয়াই গ্রামের মৃত শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে মো. বাবু ওরফে গলা কাটা বাবু এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বশির উল্যার ছেলে কাউছার (২৭)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম (৩০), নেহাল (৪৫), মো. বোরহান (৩৭), মো. তুহিন (৩৭), জাকির হোসেন (৪০), সোহরাব হোসেন (৪০), বাছির আহাম্মদ (৩৭), মো. মিজান (৫০), আলমগীর হোসেন (৪৫), কছির আহম্মেদ (২৫), কামরুল ইসলাম (৪০), আনোয়ার হোসেন (৩৩), তারেক আজিজ সুজন (৩৩), মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম (২৯)। তারা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ এবং নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার বাসিন্দা।  
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- গোলাম রাব্বানী ও সোহেল।  যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ভিকটিম মো. মামুনুর রশিদ খান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি এ ইউনিয়নের আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের আবু তৈয়ব খানের ছেলে। ২০১৫ সালের ১৮ মে রাতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তার মৃত হয়।

মামলার এজাহার, আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা মামুনের সঙ্গে চন্দ্রগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী সোলাইমান জিসানের বিরোধ ছিল। জিসান বাহিনীর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালালে এর জন্য যুবলীগ নেতা মামুনকে দায়ী করা হয়। পরে জিসান র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এজন্যও মামুনকে দায়ী করেন তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। জিসানের মৃত্যুর পর ওই বাহিনীর দায়িত্ব নেন তার ভাই সৌদি প্রবাসী মো. তুহিন।  

তিনি বিদেশ থেকে দেশে এসে যুবলীগ নেতা মামুন ও তার সঙ্গী ওমর ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ঘটনার রাতে মামুন ও ওমর ফারুক মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে জিসান বাহিনীর সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। ওমর ফারুক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে রক্ষা পেলেও এতে মামুনের মাথা, পেট ও বুকে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ মামুনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চন্দ্রগঞ্জের একটি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

এ ঘটনার পরদিন নিহতের বড় ভাই মো. ফকরুল ইসলাম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৪/১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।  

হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন চন্দ্রগঞ্জ থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ গোলাম হাক্কানী। তিনি ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ২১ আসামির নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।  

আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় দেন। রায়ের সময় আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মধু ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর টিপন উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।  

এদিকে সন্ত্রাসী জিসানের ভাই তুহিনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা মামুনুর রশিদ হত্যার সাড়ে তিন মাস পর তার সঙ্গী ওমর ফারুককেও গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।