নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে (৪৫) শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী ওসমান গণিকে (৬২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওসমান নলডাঙ্গা উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল মৃধার ছেলে। নিহত গৃহবধূ রোকেয়া জেলার সিংড়া উপজেলার উত্তর খাজুরিয়া গ্রামের মৃত আদব আলী মণ্ডলের মেয়ে।
ওই ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান এ তথ্য বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ওসমান গণির সঙ্গে রোকেয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবি করে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী ওসমান। রোকেয়া নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আপন ভাই একাব্বর হোসেন ওরফে ফেলুর কাছ থেকে বেশ কয়েকবার অল্প অল্প করে টাকা এনে দেন স্বামীকে। এতে ওসমানে যৌতুকের চাহিদার আরও বেড়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন রোকেয়ার ভাই একাব্বর। এনিয়ে রোকেয়ার সঙ্গে ওসমানের প্রায়ই ঝগড়া লেগেই থাকতো। এরই এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট রাতে রোকেয়ার গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ওসমান। হত্যার পর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে সবাইকে জানান ওসমান। তবে ঘটনার পরের দিন রোকেয়ার বড় ভাই একাব্বর হোসেন বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ ওসমানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। এছাড়া ওসমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘ ১০ বছর ওই মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য শেষে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক। মামলার রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এসআরএস