ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নাটোরের সেই শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
নাটোরের সেই শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ

ঢাকা: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে করা বরখাস্তের আদেশ (সব ধরনের প্রসিডিংস) প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতের আদেশে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হাজিরের পর বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী বশির আহমেদ। জেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী মোস্তাক আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

পরে বশির আহমেদ জানান, শিক্ষা অফিসার হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। আদালত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নেওয়া প্রসিডিংস সাতদিনের মধ্যে প্রত্যাহার করে নিতে বলেছেন। আর আদালত ১১ নভেম্বর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।  

আদালতে ৩০ আগস্ট রিট করেন আইনজীবী বশির আহমেদ। ওইদিন তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রকাশিত হওয়া সংবাদ যুক্ত করে রিট করি। জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় স্লোগান। এটা দেওয়ার কারণে কাউকে বরখাস্ত করা বেআইনি। তাই কেন তার বরখাস্তের আদেশ বেআইনি হবে না, আদালত এই মর্মে রুল জারি করেছেন। আর ১৮ অক্টোবর ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করেছেন।

সেই অনুসারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী হাইকোর্টে হাজির হন।

এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় শোক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষককে সংসদ সদস্যের নির্দেশে বরখাস্ত করেছে জেলা শিক্ষা অফিস।

গত ২২ আগস্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবীর সই করা এক চিঠিতে গুরদাসপুর উপজেলার দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ. ম. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে মাসুদুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তিনি দোষ স্বীকার ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে ওই শিক্ষকের জবাবের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হলে তিনি সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।

নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ গোলাম নবী বলেন, গুরদাসপুর উপজেলার দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমান রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। সংসদ সদস্যের নির্দেশ পেয়ে ওই শিক্ষককে প্রথমে শোকজ এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত জবাবে উল্লেখ করেন, গত ১৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রস্তুতি উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা ও একটি গণমিছিলে অংশ নিই। মিছিলে আমি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত নাগরিক হিসেবে স্লোগান দিই।
 
তিনি বলেন, শোক দিবসের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলী মোল্লা।  

সংসদ সদস্যের প্রতিপক্ষ নেতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন ওই শিক্ষক।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩ 
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet