ঢাকা: বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
সিএমএম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন থানা থেকে মোট ২০৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। যার মধ্যে ওয়ারী থানায় ২২, যাত্রাবাড়ী থানায় ১৭, কাফরুল থানায় ১৫, পল্লবী থানায় ১৯, গেন্ডারিয়া থানায় ৩, সূত্রাপুর থানায় ৬, ক্যান্টনমেন্ট থানায় ১, খিলখেত থানায় ৩, নিউমার্কেট থানায় ৪, কলাবাগান থানায় ১, রামপুরা থানায় ৩, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ১, হাতিরঝিল থানায় ১, তেজগাঁও থানায় ৩, আদাবর থানায় ৫, মোহাম্মদপুর থানায় ৩, রমনা থানায় ৩, শাহবাগ থানায় ২, কাফরুল থানায় ১৫, মতিঝিল থানায় ৩, শাহজাহানপুর থানায় ১, গুলশান থানায় ১, বাড্ডা থানায় ৬, বংশাল থানায় ৬, কোতোয়ালি থানায় ২, চকবাজার থানায় ৬, কামরাঙ্গীরচর থানায় ১০, লালবাগ থানায় ৪, কদমতলী থানায় ১৮, শ্যামপুর থানায় ২, হাজারীবাগ থানায় ৬, উত্তরখান থানায় ৫, ডেমরা থানায় ৪, খিলগাঁও থানায় ৮, মুগদা থানায় ২, দারুসসালাম থানায় ১০ এবং শাহ আলী থানা থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একইদিনে মহানগর এলাকার বাইরে ঢাকার অন্যান্য থানা থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার তথ্য জানা গেছে। যার মধ্যে কেরানীগঞ্জে ৯, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ৬ ও সাভার থানায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
অপরদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। একই দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ অন্য নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের ডাক দিয়েছে উচ্চ আদালতের আদেশে নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামী।
সেসব সমাবেশ সামনে রেখে বৃহস্পতিবার থেকেই ঢাকার প্রবেশ পথগুলোয় তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকায় প্রবেশের আগে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ সময় অনেককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান চালিয়ে পুরনো নাশকতার মামলায়ও অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও পুলিশ বলছে, বড় সমাবেশকে সামনে রেখে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবেই তারা তল্লাশী করছে। নিয়মিত মামলায় ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি বা নাশকতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই কেবল কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি ও বিরোধী দলগুলো যেকোনো সমাবেশের ডাক দিলেই সরকার পুলিশ বাহিনী দিয়ে গণগ্রেপ্তার অভিযান চালায়। সরকার হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপির একদফার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভণ্ডুল করতে চায়। তাই এবারও তারা নিরীহ নেতাকর্মীরে গ্রেপ্তার করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে হামলা-মামলা দিয়ে এ গণআন্দোলন ঠেকানো যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৩
কেআই/জেএইচ