ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বেতের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট: পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
বেতের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট: পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

ঢাকা: হবিগঞ্জের মাধবপুরে ‘শিক্ষকের ছোড়া বেতের আঘাতে মেহেদি হাসান নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর এক চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার’ ঘটনায় পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে চোখ নষ্টের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নির্ণয় করতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই শিশুটির বাবা মোতালেবের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফারুখ আলমগীর চৌধুরী। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

এর আগে ১২ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করা হয়। রিটে চোখ নষ্টের ঘটনায় তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন রোধে বিবাদীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।  

চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধবপুরের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনে ‘মাধবপুরে শিক্ষিকার আঘাতে আরেকটি চোখও নষ্টের পথে’ শীর্ষক গত ২৯ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিক্ষিকার ছোড়া বেতের আঘাতে শিক্ষার্থীর এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অপর চোখটিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ চোখটি নষ্ট হলে পৃথিবীর আলো দেখা শেষ হয়ে যেতে পারে মেহেদি হাসানের।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার নামে বিভাগীয় মামলাও করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে স্থায়ীভাবে বদলি করা হয়েছে।

শিশুটির এক স্বজন জানান, ডাক্তার বলেছেন, আঘাতপ্রাপ্ত চোখটি রক্ষা করা সম্ভব নয়। চোখগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি সংযুক্ত থাকে। তাই অপর চোখটি রক্ষা করতে হলে চিকিৎসায় অন্তত ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। এ টাকা তার পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। সরকারি সহায়তা ছাড়া শিশুটির চোখ রক্ষা করা তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।

শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই উপজেলার বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোর্শেদা আক্তার প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসানের দিকে একটি বেত ছুড়ে মারেন। এতে তার ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মেহেদিকে দ্রুত ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। গত ১৭ আগস্ট সেখানে তার চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। চোখটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অপর চোখটিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।