ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগান, বংশাল ও কোতয়ালী থানার তিন মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব মামলায় ৩৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তিনজন বিচারক পৃথকভাবে এই রায় দেওয়া হয়।
এর মধ্যে কলাবাগান থানার মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দার আসামি রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৪০ জনকে পৃথক তিন ধারায় দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৭ দিন কারাদণ্ড দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া এ মামলার চার্জশিটভুক্ত অপর ২৬ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এ মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন—মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. শাহ আলম সৈকত, মো. জাকির হোসেন, মো. নোমান, মো. এলিন, মো. ওয়াসিউল হাসিব আনিক, পলাশ হাওলাদার, মো. আমিরুল বেপারী চৌধুরী, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. আলমগীর হোসেন, মো. রিপন আহম্মেদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহ পরান, মো. মাহমুদুল হাসান রুম্মান, মো. কামাল, মো. ফারুক, মো. ফরহাদ, মো. ইসমাইল শেখ, মো. জুয়েল, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. রবিউল ইসলাম, মো. মোস্তফা, মো. রুবেল, মো. রুবেল হোসেন, সোহেল, মো. সিদ্দিক, মো. ফয়সাল, মো. শহিদুল, মো. রাসেল, আ. লতিফ, মো. রুবেল, মো. মনির হোসেন, মো. রিয়াজুল হাসান রাসেল, মো. রাজিব হাসান শিবলু, মো. মাহফুজ (চঞ্চল), জসিম রানা জসিম, জোবায়ের হোসেন ও অনুপ চন্দ্র রায়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে এ মামলাটি করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে ৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
এদিকে ২০১৮ সালে ঢাকার বংশাল থানায় দায়ের করা নাশকতার আরেক মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে পৃথক দুই ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী। এছাড়া তাদের তাদের প্রত্যেককে দুই ধারায় চার হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—সোহেল, মো. রাজু, বল্লম বাজু, সিরাজ, মামুন, মো. রনি, মো. মঈন, আজিম, মো. ওমর ফারুক, ইমরানুল হক ওয়াহিদ, মো. মামুনুর রশিদ মামুন, মাসুদ রানা, তাইজুদ্দিন, নাজিবুল্লাহ, মো. শাহজাহান খান, বিল্লাল হোসেন, আমির হোসেন বিপু, স্বপন, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, আরিফুর রহমান, রাজিয়া আলম, মো. জুবায়ের আলম, তাইজু, সাঈদ ও হাজী মো. মাছুম।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বংশাল থানা এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বংশাল থানার এসআই মো. আজাহার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পেনাল কোড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অভিযোগ আনা হয়।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বংশাল থানার এসআই মো. আবু সাঈদ চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুল হকের আদালত মামলার চার্জগঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু করেন। বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
এছাড়া অবরোধে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতয়ালী থানার আরেক মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—আনোয়ারুল আজিম, হায়দার আলী বাবলা, সুমন হোসেন, শাহিন, আলাউদ্দিন, হীরা, রজ্জব আলী পিন্টু ও সেন্টু। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার বাবুবাজারে গাড়ি ভাঙচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিশ। কোতয়ালী থানার এসআই মো. আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলার বিচার চলাকালে মোট আটজন সাক্ষ্য আদালতে সাক্ষ্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
কেআই/এমজেএফ