কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর চর থেকে মিলন হোসেন (২৭) নামে যুবকের আট টুকরো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও কিশোর গ্যাং লিডার এসকে সজিব ও ইফতির তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন সকালে চারদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজু মোহন সাহা।
কুষ্টিয়া সদর থানা সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের এসআই ইস্কান্দার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত মিলন দৌলতপুর উপজেলার বাহিরমাদি গ্রামের বাসিন্দা মওলা বক্সের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ই-ব্লকের একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী মিমি খাতুনসহ থাকতেন ও আউট সোর্সিং করতেন। এছাড়া অভিযুক্তদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন তিনি।
জানা গেছে, মিলন গত ৩১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে হরিপুর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর চর থেকে মিলনের আট টুকরো দেহাংশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। ৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া সদর থানায় ছেলে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের মা শেফালী খাতুন।
মিলনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত ৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও কিশোর গ্যাং লিডার এসকে সজিবসহ তার গ্যাংয়ের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। গত ৪ ও ৫ ফ্রেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়া লিংকন, জনি, ফয়সাল ও সজল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও গ্রেপ্তার গ্যাং লিডার এসকে সজিব ও ইফতি নামে দুজন আদালতে দায় স্বীকার না করায় এই দুজনকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ নেতা কিশোর গ্যাং লিডার এসকে সজিবের নেতৃত্বে ব্লাকমেইল (কৌশলে জিম্মি), মোবাইলফোন নম্বর ক্লোন বা হ্যাক করে বিকাশ অ্যাকাউন্টের টাকা আত্মসাৎ, অস্ত্র, মাদক ও নারী ব্যবসাসহ নানা অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে আয় করা টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে সৃষ্ট বিরোধের জেরে মিলনকে হত্যা ও মরদেহ টুকরো টুকরো করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন- কুষ্টিয়া শহরের বড়বাজার দেশওয়ালী পাড়ার বাসিন্দা কাজী ফরহাদ হোসেনের ছেলে কাজী লিংকন হোসেন (২৩), হাউজিং সি ব্লক ২৫৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আওলাদ খানের ছেলে ইফতি খান (১৯), আড়ুয়াপাড়া হরিবাসর মোড়ের ২২৯ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মৃত মিলন শেখের ছেলে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এসকে সজিব (২৪), সদর উপজেলার বোয়ালদাহ গ্রামের বাসিন্দা রফিক প্রামাণিকের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা জনি আহমেদ (১৯), কুমারগাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে ফয়সাল আহমেদ (২৫) এবং হাউজিং এস্টেট ডি ব্লকের বাসিন্দা সাইদুল ইসলামের ছেলে মো. সজল ইসলাম (১৯)।
** প্রতারণার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবককে ৮ টুকরো করে খুন, আটক ৪
** হত্যা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জন কারাগারে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
এসআরএস