ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ভালুকার সেই শিশুকে আপাতত মামার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪
ভালুকার সেই শিশুকে আপাতত মামার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ মাহারা শিশু

ঢাকা: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা ও দেড় বছরের শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিতে র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং ময়মনসিংহ পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নজরে আনার পর সোমবার (১৩ মে) বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

 

৯ মে দিনগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ওই শিশু ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা জানা যায়নি। পরে ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে মা মারা যান।

সেখানে মা হারা এই শিশুটির চিৎকারে পরিবেশ ভারি হয়ে যাওয়ায় ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে নেটিজেনদের হৃদয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।  

পরে শনিবার (১১ মে) রাত ১১টায় ভালুকা হাইওয়ে থানার পুলিশের কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা ও বেঁচে যাওয়া শিশুর পরিচয় মিলেছে। মায়ের নাম জায়েদা (৩২)।

তিনি সিলেট সুনামগঞ্জ জেলার দুয়ারা উপজেলার খুশিউড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। বেঁচে যাওয়া দেড় বছর বয়সী শিশুটির নাম জাহিদ হোসেন।  

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুক মিয়ার সঙ্গে নিহত জায়েদার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ফারুক স্থানীয় বাসিন্দা কফিল উদ্দিনের ছেলে। ফারুকের ঘরে প্রথম স্ত্রীসহ তিনটি সন্তান রয়েছে। যে কারণে জায়েদার বিয়ে মেনে নেয়নি ফরুকের পরিবার। ফলে স্বামীর যোগাযোগ না থাকায় স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জাহিদকে নিয়ে বসবাস করতেন জায়েদা। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার দিন রাতে তিনি রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হন।  

নিহত জায়েদার বড় ভাই মো. রবিন মিয়া বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ফেসবুকের মাধ্যমে জায়েদার মৃত্যুর খবর পান তারা।

বতর্মানে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।  

তিনি জানান, আদালত বিবেচনায় আদেশ দিয়েছেন।

এক. এ বিষয়ে ভালুকায় দায়ের করা মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে দায়ী গাড়ি সনাক্ত এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করতে ময়মনসিংহের পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই. প্রয়োজনীয় তথ্যসহ অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী ২০ মে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।  

তিন.সংশ্লিষ্ট ডিআইজিকে বিষয়টি তদারকি করবেন।

চার. র‌্যাবের ডিজি আসামি গ্রেপ্তারের জন্য ব্যবস্থা নেবেন।  

পাঁচ. ভিন্ন কোনো দাবি না থাকায় শিশুটির তত্ত্বাবধান ও হেফাজতের জন্য তার মামার কাছে অস্থায়ীভাবে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

ছয়. শিশুটির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।  

সাত. শিশুটির অভিভাবকত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন দাখিল ও নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।