ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালামারীর ইছাডাঙ্গা গ্রামের এক শিশুকে (১১) ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে রাসেল সিকদার (২৩) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-২০০০ আইনের ১৯(৪) (খ) ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুরে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার সিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় দেশে তাকে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিশুটি আসামি রাসেল সিকদারের (পরিবারগত বা গুষ্টিগত) চাচাতো বোন হয়। শিশুটি পাশের একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। শিশুটির মায়ের বাড়ির পাশে রাস্তায় মুদি দোকান রয়েছে। দোকানে রাসেলের কিছু টাকা বাকি ছিল। ঘটনার দিন ২০২২ সালের ২২ আগস্ট সন্ধ্যায় রাসেল শিশুটিকে বাড়ি থেকে পাওয়া ১৫০ টাকা নিয়ে আসতে বলেন। রাসেল তখন বাড়িতে একাই ছিলেন। শিশুটি রাসেলের বাড়িতে টাকা আনতে গেলে পাশের গোসল খানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষণের কথা জানাজানির ভয়ে শিশুটিকে হাত-পা বেঁধে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন।
এদিকে, শিশুটির না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে ও মসজিদে মাইকিং করতে থাকে এবং জরুরিসেবা ৯৯৯ -এ কল করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাসেল তখন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। পরে রাসেলের দেখানো মতে গোসল খানার ভেতর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাসেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে রাসেল নিজেই হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মো. মোক্তার হোসেন পরদিন বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আজাদ হোসেন ৩০ এপ্রিল ২০২৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৪
এসআরএস