ঢাকা: কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পর আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
বুধবার (১০ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে কোটা নিয়ে রাষ্ট্র ও শিক্ষার্থীদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক শুনানি করেন। আর রিট আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানি করেন।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি ছিল, পরবর্তীতে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতির বিষয়ে সরকার একটি কমিটি করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সেটা বাতিল করে দেওয়া হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে সেটা বহাল থাকে।
‘পরবর্তীতে এটা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ কোটা পদ্ধতি বাতিলের প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করেন। এর প্রেক্ষিতে কোটা পদ্ধতি যেটা আগে ছিল, সেটাই আবার পুনর্বহাল হয়। তার বিরুদ্ধে আমরা (রাষ্ট্রপক্ষ) আদালতে (আপিল বিভাগে) গিয়েছিলাম (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে)। শুনানি শেষে আদালত সাবজেক্ট ম্যাটারে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। অর্থাৎ সাবজেক্ট ম্যাটারে কোটা নেই। তাই সাবজেক্ট ম্যাটার অনুযায়ী সেটাই চলবে। আগামী ৭ আগস্ট এটা আবার শুনানির জন্য আসবে। সে পর্যন্ত এভাবে চলবে। ইতোমধ্যে আমরা (হাইকোর্টের) রায় টা পেয়ে গেলে রেগুলার পিটিশন (লিভ টু আপিল) ফাইল করব। তখন শুনানি শেষে আদালত পূর্ণাঙ্গ রায় দেবেন। ’
শুনানিতে আদালত কী বলেছেন এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালত একটি কথা বলেছেন, কোনোভাবেই রাস্তায় আন্দোলন করে তো আদালতের রায় পরিবর্তন করা যায় না। আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে কারো যদি বক্তব্য থাকে, সেক্ষেত্রে আদালতে আসতে হবে। আদালত বলেছেন, আদালতে আসতে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা বলেন, ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আমি বলব, আপনাদের আর আন্দোলন করার যৌক্তিক কারণ নেই। যেহেতু আদালত একটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন। আপনারা সবাই রাস্তা ছেড়ে (দেন)। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন না, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে মানুষের সমস্যা হয়। মানুষের সমস্যা হলে রাষ্ট্রকে দেখতে হয়। এ কথাগুলো বিবেচনা করে অবশ্যই আপনারা আপনাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কী বলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে বলেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে নিয়ে যাবেন, বোঝাবেন।
আরও পড়ুন>> ‘আপাতত কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল থাকবে’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৪
ইএস/এসএএইচ