ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নড়াইলে গৃহবধূ হত্যা: স্বামীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
নড়াইলে গৃহবধূ হত্যা: স্বামীসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

নড়াইল: নড়াইলে বন্ধুর সহায়তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী রনি শেখ ও তার বন্ধু মেহেদী হাসানের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই সঙ্গে তাদের  দুজনকে এক লাখ করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া হত্যার পর লাশ গুম করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপরাধে উভয়কে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার করে টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরের নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আলমাচ হোসেন মৃধা এ রায় দেন।  

মামলার রায়ে বলা হয়েছে, চার বছর আগে ষড়াতলা গ্রামের আছিয়া খাতুনের সঙ্গে রনি শেখের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে বায়েজিদ নামে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এই সন্তান জন্মের ছয় মাস পরে পারিবারিক কলহের জেরে রনি শেখ তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এর তিন মাস পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় পুনরায় তাদের বিয়ে হয়। সেসময় কন্যার শান্তির কথা ভেবে আছিয়া খাতুনের পরিবার পৈত্রিক ৯ শতক জমির ওপর একটি একতলা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেন।  

স্বামী রনি শেখ বাংলালিংক কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর থাকাকালে গন্ডব গ্রামের হাসিনা খানমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনা নিয়ে আছিয়া এবং রনি শেখের মধ্যে প্রায়ই কলহ চলতো। এক পর্যায়ে স্ত্রী আছিয়াকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বাল্যবন্ধু মেহেদীর সঙ্গে লোহাগড়ার আলামুন্সির মোড়ে পরামর্শ করেন। সেখান থেকে দুই লিটার পেট্রল কিনে নেন। ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর সকালে দুই বন্ধু ষড়াতলা গ্রামের আনোয়ারের পুকুরে গোসল করার সময় হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর যে যার বাড়ি ফিরে গিয়ে সাড়ে ১১টার দিকে বন্ধু মেহেদীর বাড়িতে আসেন। সেসময় মেহেদী ঘর মোছার মফের স্টিলের পাইপ দিয়ে আছিয়া খাতুনের মাথায় আঘাত করেন। এতে আছিয়া জ্ঞান হারালে গলায় ওড়না ও বালিশ চাপা দেওয়া হয়। এতে কাজ না হলে রান্নাঘর থেকে বটি এনে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। এরপর পেট্রল ঢেলে আছিয়ার শরীর এবং ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।  

এ ঘটনায় ৫ নভেম্বর আছিয়ার মা রেবেকা বেগম বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষে ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দেন।  

মামলার রায়ে সন্তুষ্ট হলেও আছিয়ার মা রেবেকা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি, তবে উচ্চ আদালতের কাছে দাবি দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক।

নড়াইল নারী ও শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।