ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আদালতে কাঁদলেন শিবলী রুবাইয়াত 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫
আদালতে কাঁদলেন শিবলী রুবাইয়াত  বিএসইসি সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

ঢাকা: ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় শুনানিকালে আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।  

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জাকির হোসেন গালিবের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এ ঘটনা ঘটে।

 

এর আগে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে দুদক। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীর কাছে মামলার কাগজপত্র না থাকায় শুনানি পেছাতে আবেদন করেন তারা। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।  

আজ রিমান্ড শুনানির জন্য তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। আসামিপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব বোরহান উদ্দিন রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেন।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত শিবলী রুবাইয়াতের বক্তব্য আছে কিনা জানতে চান? এ সময় শিবলী রুবাইয়াত আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার যা সম্পত্তি সেগুলো পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। শেয়ার মার্কেটে আমার কোনো বিনিয়োগ নেই। আমি নিজে কোনো ফ্ল্যাটও কিনিনি। এমনকি রাজউকের কোনো প্লট চাইনি। অথচ আমাকে বলা হচ্ছে মানি লন্ডার বা অর্থ পাচারকারী। মানিলন্ডারিং করলে তো হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করতাম। আমার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব পাঁচ মাস আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি প্রতিনিয়ত দুদককে সহযোগিতা করেছি। যখন যা চেয়েছে তাই দিয়েছি। গতকালও আমি দুদকে গিয়েছে। অথচ তারা কেন আমাকে রিমান্ড চাচ্ছে সেটা বোধগম্য নয়। এসব কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন।

শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন। আদালত আদেশে বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এদিকে আটকের পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি শিবলী রুবাইয়াতসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর উপপরিচালক মাসুদুর রহমান।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন মোনার্ক হোল্ডিং ইনকরপোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের মালিক আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এফএভিপি ইসরাত জাহান, ব্যাংকটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখার অপারেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে মামলায় ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে এক কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুষ গ্রহণ করে এবং ভুয়া পণ্য বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানির কৌশলে এক কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকাসহ তিন কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতকে ২০২০ সালে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত সাধারণ বীমা করপোরেশনেরও (এসবিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৫
কেআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।