ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সিলেট: সিলেটে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মো. মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিল নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও বিশেষ দায়রা জজ স্বপন কুমার সরকার এ রায় দেন।  

অত্র আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত মোজাম্মেল মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিণ কলারাই গ্রামের মৃত জিলু মিয়ার ছেলে।

২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে যুগনী বিলে অর্ধগলিত অবস্থায় অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ওসমানীনগর থানার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র তৈরি করে সুরতহাল প্রতিবেদনে প্রস্তুত করান।

সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে আসে নৃশংসভাবে হত্যার বর্ণনা। নিহতের মস্তক নেই, দুই স্তন, দুই বুকের মাংস বিচ্ছিন্ন, দুই পায়ের হাটুর উপরিভাগের মাংস কেটে অন্য কোথাও ফেলা হয়েছে। পুলিশ আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও দেহের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো পায়নি। তবে ধারণা করা হয়, মরদেহটি কোনো নারীর। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এরপর ৩ ডিসেম্বর ওসমানীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার বরাত দিয়ে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. আবুল হোসেন বলেন, ক্লুলেস মামলাটির তদন্তকালে নিহতের স্বামী আসামি মো. মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিলকে গ্রেপ্তারপূর্বক সাক্ষীদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে জানান, তার স্ত্রী সন্ধ্যা ওরফে শাহনাজ বেগমকে খুন করে সেই স্থানটিতে (উদ্ধারস্থল)। মাথাসহ দেহের বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ফেলা হয়, যেটি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শনাক্ত করে দেয়। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন-নিহত শাহনাজ আগে খ্রিষ্টান ছিলেন। মৌলভীবাজার আদালতে এফিডেভিট করে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। তার বাবার বাড়ির কোনো ঠিকানা নেই। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি যেতে চাইলে তালাক দিয়ে যাওয়ার জন্য বলতেন। কিছুদিন পর তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে তার মা তাকে রাখতে চান না, তাই ক্ষোভ থেকে তাকে হত্যা করেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে মামলাটি ২০২২ সালে অত্র আদালতে স্থানান্তর হলে ১০০ নাম্বার মূলে আদালতে বিচার শুরু হয়। চার্জগঠনের পর হত্যা মামলাটিতে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন রফিক আহমদ।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৫
এনইউ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।