ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বিনামূল্যে আইনি সেবা

গত বছর পেয়েছেন সাড়ে ৩০ হাজার ব্যক্তি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
গত বছর পেয়েছেন সাড়ে ৩০ হাজার ব্যক্তি

ঢাকা: ২০১৫ সালে সারা দেশে সরকারি খরচে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছেন ত্রিশ হাজার ৪শ’ ৯ জন ব্যক্তি। যা ২০১৪ সালের চেয়ে ৫ হাজার একশ’ ২৬ জন বেশি।


 
দেশের স্বল্প আয়ের ও অসহায় নাগরিকদের আইনি সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’ করা হয়। এ আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা। এ সংস্থার অধীনে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৬৪  জেলায় লিগ্যাল এইড কমিটি কাজ করছে।
 
সরকারের এ বিনামূল্যে আইনি সহায়তার কর্মসূচি শুরু হয় ২০০৯ সালে। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ সংস্থাটি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীকে সেবা দিয়ে আসছে।
 
‘অর্জন আরও বাড়ছে’
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক(সিনিয়র জেলা জজ) মালিক আব্দুল্লাহ আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, বিনামূল্যে আইনি সহায়তা সেবা দেওয়ার হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছরের এ কয়েক মাসে আরো বেড়েছে। অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের সরকারি খরচে সেবা পাওয়া অধিকার। সরকার এ জন্য হটলাইন চালু করেছে। মানুষ হটলাইনেও আমাদের থেকে আইনি সেবা/পরামর্শ নিচ্ছেন।    
 
সাত বছরের সেবার চিত্র
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা থেকে বিনামূল্যে আইনি সেবা গ্রহণ করেছেন ২০০৯ সালে ৯ হাজার একশ’ ৬০ জন, ২০১০ সালে ১১ হাজার ২শ’ ৬৬ জন, ২০১১ সালে ১২ হাজার ৫শ’ ৮৬ জন, ২০১২ সালে ১৫ হাজার ৪শ’ ৫০ জন, ২০১৩ সালে ১৯ হাজার ৪শ’ ৯৩ জন, ২০১৪ সালে ২৫ হাজার ২শ’ ৮৩ জন এবং ২০১৫ সালে ৩০ হাজার ৪শ’ ৯ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ১২ হাজার ৪শ’ ১৬টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
 
কারা পাবেন বিনামূল্যে আইনি সেবা
আইনগত সহায়তা প্রদানের আইন মতে, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল যেকোনো ব্যক্তি (সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে নয় ও অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়), কর্মক্ষম নন, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে আয় করতে অক্ষম এমন মুক্তিযোদ্ধা, যেকোনো শ্রমিক যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়, বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন কোনো ব্যক্তি, ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ মাতা, পাচারের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ নারী বা শিশু,   দুর্বৃত্ত দ্বারা অ্যাসিড দগ্ধ নারী বা শিশু,  আদর্শ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দ প্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, অস্বচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুঃস্থ নারীরা বিনামূল্যে আইনি সেবা পাবেন।

এছাড়া উপার্জনে অক্ষম এবং সহায় সম্বলহীন প্রতিবন্ধী, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অসমর্থ ব্যক্তি, বিনা বিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অস্বচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি এবং জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অস্বচ্ছল বলে সুপারিশ করা বা বিবেচিত কোনো ব্যক্তি পাবেন এ সহায়তা।
 
সুপ্রিম কোর্ট কমিটি
শুধু ৬৪ জেলাতেই নয়, উচ্চ আদালতেও রয়েছে আইনগত সহায়তা সংস্থার অফিস। আনুষ্ঠানিকভাবে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর অফিসটির উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এর আগে গঠন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি।
 
বর্তমানে এ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। সঙ্গে রয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীসহ ১১জন সদস্য। এর মধ্যে চেয়ারম্যানসহ ১০ জন নিয়ে মূল লিগ্যাল এইড কমিটি। বাকি দু’জন পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
 
এ কমিটির মাধ্যমে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- ফৌজদারি আপিল ও রিভিশন, দেওয়ানি আপিল ও রিভিশন, জেল আপিল, রিট পিটিশন ও লিভ টু আপিল।  

সুপ্রিম কোর্টে আইনি সেবা দেওয়ার জন্য লিগ্যাল এইড অফিস হাইকোর্ট বিভাগে ৬৯ এবং আপিল বিভাগে ৫ জন আইনজীবী দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।