ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শর্তসাপেক্ষে সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার আদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
শর্তসাপেক্ষে সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার আদেশ

ঢাকা: আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের শর্ত সাপেক্ষে মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ অবিলম্বে খুলে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

ওইদিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করা হলে বিটিআরসিকে ফের তরঙ্গ বরাদ্দ বন্ধ করতেও বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তরঙ্গ বরাদ্দ খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে সিটিসেলের আপিল আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।

বৃহস্পতিবার সকালে ও গত মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর)  বিটিআরসি’র পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।

শুনানিতে আদালত দুইপক্ষের মধ্যে পাওনা-দেনা নিয়ে বিরোধ হলে সেটা কিভাবে সমাধান হবে, তা বৃহস্পতিবার জানাতে আইনজীবীদের বলেছিলেন। সে অনুসারে উভয়পক্ষের আইনজীবী এর ব্যাখ্যা দেন।

মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে সিটিসেলের কাছে বিটিআরসি’র পাওনা ৪৭৭ কোটি কোটি টাকা বলা হলেও বৃহস্পতিবার বিটিআরসি’র  আইনজীবী পাওনা কমিয়ে ৩৯৭ কোটি টাকার উল্লেখ করেন। এ নিয়ে বিটিআরসি ও সিটিসেলের বিতর্ক নিরসনে  প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন আদালত। কমিটির অন্য দুই সদস্য থাকবেন বিটিআরসি’র কমিশনার (স্প্রেক্ট্রাম) এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব।

এ কমিটিকে একমাসের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিতর্কের নিরসন করবেন। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, দুইপক্ষকেই তা মানতে হবে।

এছাড়াও টেলিযোগাযোগ আইনে বিটিআরসি’র পাওনা নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা আপিল কিংবা রিভিউ করার কোনো বিধান নেই। যেটি অন্য সব আইনে আছে। এজন্য টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধন করতে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে উপদেশ দিতে আইনজীবীকে বলেছেন আদালত।  

পাওনা টাকা না দেওয়ায় গত ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)।

বিটিআরসি’র এ সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে গত ২৪ অক্টোবর আবেদন করে সিটিসেল।

এ আবেদনের পর ২৫ অক্টোবর অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

২৪ অক্টোবর সিটিসেলের আইনজীবীরা জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক বিটিআরসি ও এনবিআরের ১৪৪ কোটি টাকা শোধ করা হয়েছে। এরপরও সিটিসেলের তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।     
 
গত ১৭ আগস্ট একমাসের শো’কজ নোটিশ দিয়ে সিটিসেলকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। পৌনে ৫শ’ কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া থাকা সিটিসেল গ্রাহকদের প্রথমে ১৬ আগস্ট ও পরবর্তীতে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। ২৩ আগস্ট সিটিসেলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ, অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিলো।

এর মধ্যে সিটিসেলের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে সিটিসেলকে দেওয়া শো’কজ নোটিশের সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

গত ২৯ আগস্ট আপিল বিভাগ বিটিআরসি’র পাওনা পরিশোধে সিটিসেলকে দু’মাস সময় দেন। এর মধ্যে প্রথম মাসে তিন ভাগের দুই ভাগ ও দ্বিতীয় মাসে বাকি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন।

** সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার বিষয়ে আদেশ সাড়ে এগারটায়

 

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।