ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট

‘৬৭ বছর অতিক্রমের পরও কোন কর্তৃত্ববলে মাহবুবে আলম অ্যাটর্নি জেনারেল পদে বহাল আছেন’- রুল জারির এমন আরজি জানিয়ে করা এক রিট শুনতে ব্রিবতবোধ করেছেন হাইকোর্ট।

ঢাকা: ‘৬৭ বছর অতিক্রমের পরও কোন কর্তৃত্ববলে মাহবুবে আলম অ্যাটর্নি জেনারেল পদে বহাল আছেন’- রুল জারির এমন আরজি জানিয়ে করা এক রিট শুনতে ব্রিবতবোধ করেছেন হাইকোর্ট।
 
রোববার (২০ নভেম্বর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চের একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেন।


 
আদালতে আবেদনের পক্ষে রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
 
পরে ইউনুছ আলী বলেন, ‘রিট শুনানিতে ওঠার পর আদালত বলেন- আমাদের মধ্যে একজন ব্রিবতবোধ করছি। এখন এ রিট প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হলো’।
 
তিনি বলেন, নিয়ম অনুসারে প্রধান বিচারপতি এ রিট শুনতে নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেবেন।
 
রিট আবেদনে বলা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।   ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৬৭ বছর অতিক্রম করলেন মাহবুবে আলম অ্যাটর্নি জেনারেলেন পদে থাকা নিয়ে বিতর্ক’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত  ১৬ ফেব্রুয়ারি ৬৭ বছর  বয়স পূর্ণ হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের। তাই আইন সংশ্লিষ্টদের কারও কারও মতে, পরের দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে তিনি আর অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে থাকতে পারেন না’।

‘এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার এই প্রতিবেদককে বলেন, সংবিধানের ৬৪(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হওয়ার যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দান করবেন’।

‘তিনি বলেন, যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হলেই অবসরে যান। অর্থাৎ এরপর তাদের বিচারক পদে থাকাটা অসাংবিধানিক। একই কারণে ৬৭ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে থাকাও অসাংবিধানিক’।

‘প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৯৬(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো বিচারক সাতষট্টি বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন’।

‘এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সংশ্লিষ্টদের ৬৪ অনুচ্ছেদের কেবল শুরুর অংশ না পড়ে পুরোটা পড়ার পরামর্শ দেন। এ অনুচ্ছেদের শেষে ৬৪(৪) এ বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির সন্তোষানুযায়ী সময়সীমা পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীয় পদে বহাল থাকবেন’।
 
‘তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, এ সময়সীমা বলতে বোঝানো হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি যখন আর অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজে সন্তষ্ট থাকবেন না, তখনই তাকে অপসারণ করতে পারবেন। অর্থাৎ, সাংবিধানিক অন্য কোনো পদের মতো এখানে ৩ বা ৫ বছর সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, রাষ্ট্রপতি অসন্তুষ্ট না হলে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হওয়ার যোগ্যতা হারালেও তিনি পদে বহাল থাকতে পারবেন’।

‘জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ আমীরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে কারও সংশয় থাকলে তার তো আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছেই’।     
 
এ প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে গত ০৯ নভেম্বর রিটটি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
 
রিটে বলা হয়, লিগ্যাল রিমেমব্রান্সার ম্যানুয়াল-১৯৬০ অনুসারে অ্যাটর্নিদের পদ দুই বছরের জন্য। কিন্তু দুই বছরের আগেও তিন মাসের নোটিশ দিয়ে রাষ্ট্রপতি তাকে অপসারণ করতে পারেন। কিন্তু ওই আইন লঙ্ঘন করে প্রায় আট বছর অবিরামভাবে ওই পদে বহাল আছেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি সাংবিধানিক উল্লেখ করে রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধান মেলে চলা সবারই দায়িত্ব ও কর্তব্য। সাংবিধানিক অন্য সব পদেই নির্ধারিত সময়ের পরে আর কেউ থাকতে পারেন না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।