ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নি‍ঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন গাইবান্ধার এসপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৭
নি‍ঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন গাইবান্ধার এসপি

ঢাকা: সাঁওতালদের ঘটনায় দেওয়া এক প্রতিবেদনে ‘বাঙালি দুষ্কৃতিকারী’ শব্দ ব্যবহারের বিষয়ে আদালতের তলবে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম।
 

রোববার (০৮ জানুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন এসপি। এরপর আদালত তাকে অব্যাহতি দেন।


 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
 
গত বছরের ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের জমি নিয়ে কলের শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এতে তিনজন নিহত হন, আহত হন অনেকে।
 
পরে পুলিশ-র্যাব ওইদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মিলের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সাঁওতালদের জানমাল রক্ষা, নিরাপত্তা, ক্ষতিপূরণ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত ১৬ নভেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে প্রথম রিটটি দায়ের করা হয়।

রিটের শুনানি নিয়ে পরদিন ১৭ নভেম্বর সাঁওতালদের ধান কাটার সুযোগ দিতে অথবা ধান কেটে সাঁওতালদের বুঝিয়ে দিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চটি।
 
একইসঙ্গে সাঁওতালদের অবাধে চলাফেরার অধিকার নিশ্চিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় ক’টি মামলা হয়েছে, কারা কারা আসামি রয়েছেন সে বিষয়ে ৩০ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলে গাইবান্ধার এসপি ও ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
 
গত ৩০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিবেদন দাখিল করেন।

জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদনে বাঙালি দুষ্কৃতিকারী শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এটি দেখে আদালত ডিসিকে তলব করেন। ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি)। আদালত ডিসিকে অব্যাহতি দিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের শব্দ ব্যবহারে সতর্ক করে দিয়েছেন।

কিন্তু আদালতে তিনি বলেছেন- এসপির দেওয়া প্রতিবেদনের তথ্য মতে তিনি এ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এরপর গাইবান্ধার এসপিকে তলব করেন হাইকোর্ট।
 
পরবর্তীতে ২ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হন এসপি। ওইদিন এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, গাইবান্ধার এসপি ব্যাখ্যা দিতে ২ জানুয়ারি (সোমবার) হাইকোর্টে এসেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে ছুটি ঘোষণা করায় তিনি রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে হাজিরা দেন। তার হাজিরার বিষয়টি আদালতকে অবগত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে অনুরোধও জানিয়েছেন।   

পরে ৪ জানুয়ারি এসপির হাজিরের বিষয়টি আদালতকে অবগত করার পর ৮ জানুয়ারি এসপিকে আবার আসতে বলেছেন। সে অনুসারে রোববার ফের হাইকোর্টে হাজির হন এসপি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৭
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।